খ্রিস্টানদের কি কিস ডে পালন করা উচিত?
লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
আজকের এই বিষয় ও তেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ তো নয়। তবু ও আলোচনা করা হবে কারণ এই দিনটি ভালোবাসার দিবসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই দিনটিও তার প্রদর্শন করে।
Image by CANDICE CANDICE from Pixabay |
এই বিষয় বস্তু অনুসরণ করার পূর্বে অনুগ্ৰহ করে পাঠক-পাঠিকরা আপনারা পূর্বে লেখা অনুসরণ করুন যেমন; রোজ ডে, প্রপোজ ডে, চকোলেট ডে, টেডি ডে, প্রমিজ ডে, হাগ ডে সম্পর্কে বাইবেল ভিত্তিক বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি জিজ্ঞাসা করবেন কেন পালন করা উচিত নয়? এমনকি কিছু লোক বলবে বাইবেলে কোথায় লেখা রয়েছে কি? এই রকম বহু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে। আপনাদের জানিয়ে রাখি এটা ঠিক যে এই সব কথা সজা ভাষায় বাইবেলে কোথাও লেখা নেই। লেখা না থাকলেও কি হয়েছে? এমন কিছু বাক্য রয়েছে যা থেকে আমাদের যুবক ও যুবতীগনদের নিদর্শে করে এই সব করা উচিত নয় যেমন উদাহরণ স্বরূপ এই বাক্য বলে; (২ তীমথিয় ২:২২)।
এখানে ঈশ্বর সাধু পৌল দ্বারা যুবক ও যুবতীগণদের কিছু নিদের্শ করছেন যে, তোমরা যৌবনকালের অভিলাষ থেকে পালাও। কিন্তু যারা শুচি হৃদয়ে প্রভুকে ডাকে তাদের সঙ্গে ধার্মিকতা বিশ্বাস প্রেম ও শান্তিতে অনুসরণ করো। এখানে “যৌবনকালের” জন্য যেই গ্ৰীক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তা হল νεωτερικὰς-neoterikos যার অর্থ বয়সন্ধি বা অল্পবয়স্ক। এবং “অভিলাষের” জন্য যেই গ্ৰীক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তা হল ἐπιθυμία-epithumia এই শব্দের অর্থ দৃঢ় আবেগ, আকাঙ্ক্ষা, লালসা ও অনুভূতিকে বোঝায়। এবং এখানে যে “পলায়ন” করা জন্য যেই গ্ৰীক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তা হল φεῦγε- pheugo যার অর্থ হল কিছু করা এড়াতে। সংক্ষেপে বলা যেতে পারে যে খুব কম বয়সে ঘটে যাওয়া দৃঢ় আবেগ এড়ানোকে বোঝানো হয়েছে। যদিও যৌবনে প্রচুর আবেগগুলি প্রচলিত রয়েছে তার মধ্যে যৌন আবেগগুলি সমস্ত আবেগের মধ্যে খুবই প্রভাবশালী।
যৌন আবেগ কি ভাবে উস্কে দেওয়া যায় কি?
যখন কোন দম্পতি একে অপরকে চুম্বন করে তখন যৌন চাহিদাকে উক্তেজীত করা হয়। অর্থাৎ সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে স্পর্শ করলেই তখন যৌন আবেগকে উক্তিজীত করা যায়, যেমন ধরুন গাড়ি চালানোর মতো। যখন কেউ গাড়ি চালাতে শিখে প্রথম প্রথম গাড়িকে আসতে আসতে চালিয়ে থাকে, কিন্তু যখন ধীরে ধীরে শিখে ফেলে, তখন ধীরে ধীরে সেই ব্যক্তি গাড়ির পিকআপ ও বাড়াতে থাকে। ঠিক সেই রকম যখন কোন দম্পতি একের অপরকে ধীরে ধীরে চুম্বন করে তখন এমন একটি ধাপ চলে যায় তা আপনারা ভালো করে জানে। এখানে বলা কোন প্রয়োজন নেই। বিয়ে করার আগে যৌন চাহিদা মেটানো বা উক্তেজিত করাকে বাইবেল হিসেবে ব্যভিচার বলা হয়েছে। যখন স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এই জগতে এসছিলেন তখন কি বলেছিলেন এই বাক্যে দেখুন যথা; (মথি ৫:২৭-২৮)।
এই বাক্যেতে “স্ত্রীলোকের” শব্দের ফলে আবার অনেকের ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হয়, তখন তারা বলে এখানে “স্ত্রীলোক” বলতে, যারা বিবাহিত তাদেরকে দেখা না বলেছে। আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি শুধু যে এই বাক্য বিবাহিত নারীর কথা বলছে তা কিন্তু নয়। এখানে যেই গ্ৰীক শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে তা হল γυναῖκα-gunaika যেই শব্দটির অর্থ তা বিবাহিত নারী হোক বা নাই হোক উভয়ের ক্ষেত্রেই এই শব্দ প্রযোজ্য হয়। প্রভু যীশু ছোঁয়াছুঁয়ি তো দূরের কথা প্রভু যীশু তাকানোকেই ব্যভিচার বলেছিলেন। ২৬ পদ দেখলে প্রভু যীশু পূর্বেই ব্যভিচার করতে নিষেধ করেছেন তাহলে আপনি বাইবেলে Kiss শব্দটাই খুঁজে বেড়াছেন কেন? যে, বাইবেলে কোথায় লেখা রয়েছে বলে। যেখানে তাকোনোকেই ব্যভিচার মানে পাপ বলা হচ্ছে। সেখানে আবার Kiss শব্দ কোথায় খুঁজে বেড়াচ্ছেন? ঈশ্বর সাধূ পৌল এর মাধ্যমে যুবক যুবতীগণদের কি বলছেন তা জানতে এই বাক্যে দেখুন যথা; (১ তীমথিয় ৪:১২)।
এই বাক্যেয় সুস্পষ্ট ভাবে বলছে যে, তোমার শরীর কাউকে তুচ্ছ করতে দিওনা। কাউকে বলতে সে প্রেমিক হোক বা যেই হোক তাকে তোমার যৌবনের শরীর ছুঁতে দিওনা। শাস্ত্র যুবক, যুবতীদের আদর্শ হতে বলছে মানে যুবক যুবতীদের পবিত্র থাকা প্রয়োজন। সেই যুবক ও যুবতীকে দেখে অন্য যুবক- যুবতী পরিবর্তন হতে পারে। এই বাক্যের উদ্দেশ্য অনেকে ও বলে, আমি তাকে বিয়ে করব তাই আমি তাকে স্পর্শ করতে পারব। খ্রিস্টবিশ্বাসীরা আপনি কাকে ধোকা দিচ্ছেন? ঈশ্বর আপনার যৌবন বয়সের সব হিসেবে একদিন গুণে গুণে নিবেন যেমন এই বাক্য বলে; (উপদেশক ১১:৯)। ঈশ্বর এই বাক্যের সাহায্য যুবক ও যুবতীদের বলছে ঠিক আছে, তোমার যৌবন বয়সে মন যা চায় সেটাই করো। কিন্তু মনে রাখ তোমার যৌবন বয়সে কি করেছে কিনা করেছো! একদিন গুণে গুণে সব হিসাব নেওয়া হবে। আমার প্রিয় আপনি এখনও বিয়ে করেনি তো কোন ভাবেও ছোঁয়া-ছুঁই অনুচিত তাই এই বাক্য বলে যথা; (যাকোব ৪:৪)। এমনকি ব্যভিচারী লোকদের জন্য বাক্য স্পষ্ট রুপে বলে যে তারা ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী ও হবেন না যথা; (১ করিন্থীয় ৬:১০)।
যারা এমন ধরনের কাজে লিপ্ত আছেন তাদেরকে মন ফেরানো উচিত। আপন আপন পাপ স্বীকার করতে হবে তবে, ঈশ্বর আপনায় ক্ষমা করবেন। ক্ষমা করে ঈশ্বর আপনাকে নতূন জীবন দিতে চান যেমন বাক্যে ও বলে; (১ যোহন ১:৯)। হয়তো আপনি ভাবছেন দাঁড়াও পূর্বে ইনজয় করে নেই, পরে ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব। আমার প্রিয় এই কথা চিন্তা করা মূর্খতার স্বরূপ। আপনি আজ আছেন কাল নাও থাকতে পারেন। স্বয়ং আপনি ও জানেন না যে আপনার মৃত্যু কখন বলে! তো আপনি কাকে ধোকা দিচ্ছেন কি? কারণ বাক্যে বলে মানুষ ছায়াস্বরূপ যথা; (ইয়োব ৮:৯, গীতসংহিতা ১৪৪:৪, গীতসংহিতা ৩৯:৬)। আমাদের প্রাণ ক্ষণেকের মতো মানে ছায়া স্বরূপ, আপনি এই লেখা দেখার সাথে সাথেই ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। ঈশ্বর আপনার পাপের অনুতপ্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কখন আপনি ক্ষমা চাইবেন বলে, কিন্তু মূর্খতার পরিচয় দিবেন না। এখন আবার প্রশ্ন জাগতে পারে যে, আমি এই শারীরিক ব্যভিচার থেকে কি ভাবে বিজয় পেতে পারি? এর উওর একটাই আপনাকে বিয়ে করে নিতে হবে যেমন
বাক্য ও বলে; (১ করিন্থীয় ৭:৯)।
ঈশ্বর বিয়ে গণ্ডির মধ্যে শারীরিক সম্পর্কে জায়েজ/পবিত্রতা বলেছেন মানে যৌন চাহিদাকে। তাই কথায় বলতে গেলে বাইবেল চিৎকারে করেও বলে যে স্বামী তার প্রাপ্ত স্ত্রীকে দিক। আর স্ত্রী তার প্রাপ্ত স্বামীকে দিক। (১ করি ৭:৩ পদ) বিয়ের মধ্যে যৌন চাহিদা মেটানো কোন পাপ নয়। ঈশ্বর চায় সকলেই যৌন চাহিদা আনন্দ নিক, কিন্তু সেটা বিয়ের গণ্ডির মধ্যে। তাই তো ঈশ্বর পুরুষ জন্য নারী, আর নারী জন্য পুরুষকে সৃষ্টি করেছেন। এই পোস্টের লেখক সোমায় মুর্ম্মু। আমি যৌবন বয়সে অনেক ভুল করেছি, কোন একদিন জগতের মধ্যে হারিয়েই যাচ্ছিলাম। জগত আমাকে যা দেখাতে শুরু করেছিল তা আমি গ্ৰহণ করতে শুরু করে ছিলাম। জগতের মায়া আমার উপরে প্রভাব অনেক ফেলেছিল, কিন্তু মহান ঈশ্বরের ধন্যবাদ জানাই, তিনি আমায় সেই জগতের মায়া থেকে, তাঁর সামর্থক হিসাবে সেই মায়া থেকে অনেকটাই দূর করে ফেলেছেন। আমি যে যৌবন বয়স অতিক্রম করে ফেলেছি তা কিন্তু নয় বর্তমান ও আমি যৌবন বয়সে চলছি। কিন্তু ঈশ্বরের সামর্থক হিসাবেই আমি নিজেকে পরিবর্তন হতে শিখেছি।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।