খ্রিস্টানদের কি ইস্রায়েল জাতি সমর্থন করা উচিত?
লেখকঃ এসো বাইবেল শিখি/শিখুন।
এই বিষয় বস্তুটি দেখে অনেকে বিরক্তিবোধ প্রকাশ করতে পারেন, যে এটি আবার কেমন ধরনের বিষয়বস্তু হল কি! বিশেষ করে বিধর্মীয় লোকেরা ও ইজরায়েল প্রতি হিংসাত্মক মনোভাব লোকেরা বলতে পারে, ওয়েবসাইটের লেখকেরা কি নাকে সর্ষের তেল দিয়ে ঘুমিয়ে গেছে! নাকি চোখেও দেখতে পান না! আপনারা কি জানেন না যে, বতর্মান সময় ইজরায়েলীরা ফিলিস্তিনিদের কি হালত করে দিয়েছে! যেহেতু এই বিষয়বস্তুটি বর্তমান সময়ে ইসরাইল আর হামাসের মধ্যে সংঘর্ষের সময় আর্টিকেলটি পোস্ট করা হচ্ছে, তাই এইসব কথা বলা স্বাভাবিক। তবুও আমরা ওই তথাকথিত বিধর্মী ও ইজরায়েল প্রতি হিংসাত্মক মনোভাব লোকদের সুস্পষ্ট করে দিতে চাই, আমরা খ্রিস্টান দৃষ্টিকোণ থেকে বাইবেলের পরিভাষায় এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি নাকি বিধর্মী লোকদের দৃষ্টিকোণ দিয়ে। তাছাড়া বিধর্মীয় লোকদের উদ্দেশ্য অনুরোধ থাকবে, দয়া করে সম্পূর্ণ আর্টিকেল লেখাটি পড়ুন, এই লেখাতে অনেক কিছু তথ্য দেওয়া থাকবে। তাহলে চলুন বিষয়টি বাইবেল ভিওিক আলোচনা করা যাক। আলোচনা করার পূর্বে জানা যাক ইস্রায়েলের অবস্থান। আসুন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন।
Image by Walkerssk from Pixabay |
ইজরায়েল কোথায় অবস্থিত?
ইজরায়েল হিব্রু ভাষায় (יִשְׂרָאֵל – মেদিনাৎ য়িস্রা'এল্) বলা হয়। ইজরায়েল ভূমধ্যসাগরের পূর্ব উপকূলে পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত। ইজরায়েল উত্তর সীমান্তে লেবানন, ও দক্ষিণ-পশ্চিমে মিশর। উত্তর-পূর্বের সিরিয়া, পূর্বের জর্দান ও ফিলিস্তিনি এবং পশ্চিমে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড। সুতরাং ইজরায়েল দেশ চারপাশে মুসলিম দেশ অবস্থিত।
আমরা দেখেছি এই নিয়েও খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের নানা মতবাদ রয়েছে। কেউ বলে হ্যাঁ ইজরায়েল জাতিকে সমর্থন করা উচিত আবার অনেকে বলে নানা সমর্থন করা উচিত নয়। বিস্তারিত ভাবে উওর বোঝানোর পূর্বে একটি কথা খ্রীষ্ট বিশ্বাসী সুস্পষ্ট করে উওম হবে যে, ইজরায়েল মশীহ'কে বিশ্বাস করে না, আর নাই মশীহ কথা/ বাক্যে সেই চলে। খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা বিভ্রান্ত হবেন না, আমরা উওর সুস্পষ্ট করছি। এই বিষয় সুস্পষ্ট হওয়ার পূর্বে আমাদের এই বাক্যেটি দেখা উচিত (গীতসংহিতা ১২২:৬)।এই বাক্যে সুস্পষ্ট ভাবে ইস্রায়েলের জন্য প্রার্থনা করার উপর জোর দেওয়া হয়। এটি সত্যিই আশ্চর্যজনক নয়, যেহেতু পুরাতন নিয়ম একটি বড় অংশ ইস্রায়েলের ইতিহাস এবং তাদের সাথে ঈশ্বরের সম্পর্কের বিষয়ে। তাছাড়া বেশিরভাগ গীত পুস্তক ইস্রায়েলীয়দের দ্বারা লেখা। তাহলে আসুন আমরা কখনই ভুলে যাই না। ঈশ্বরের মনোনীত লোকেদের জন্য প্রার্থনা করা। এছাড়াও পুরো পুরাতন নিয়ম জুড়ে, আমরা দেখতে পাই কিভাবে ইস্রায়েলের লোকেদের সাথে ঈশ্বরের একটি বিশেষ সম্পর্ক ছিল। হ্যাঁ, খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের অর্থাৎ খ্রিস্টানদের ইস্রায়েলদের সমর্থন করা উচিত। খ্রিস্টানদের মনে রাখতে হবে যে ইজরায়েল জাতি ঈশ্বরের কাছে খুবই এক বিশেষ যেমন এই বাক্যে বলে যথা; (দ্বিতীয় বিবরণ ৭:৬-৮)।
ঈশ্বরের শাশ্বত উদ্দেশ্য হল ইস্রায়েলে জাতির মাধ্যমে সমগ্ৰ জাতি/ গোষ্ঠী লোকদের পাপ থেকে উদ্ধার করে আশীর্বাদ করা। ঈশ্বর ইতিমধ্যেই তিঁনি তা পরিপূর্ণ করেছেন, কারণ বাইবেল সুস্পষ্ট ভাবে বলে “ইহুদি বা যিহুদী যাই বলতে পারেন কাছ থেকে পরিত্রাণ আনয়ন করেছেন” উদাহরণস্বরূপ এই বাক্যে দেখুন যথা; (যোহন ৪:২২)। পরিত্রাণ যিহূদীর কাছ থেকে এই ঘোষণাটি ইস্রায়েলের প্রতি খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের অপরিমেয় ঋণের ইঙ্গিত দেয়। খ্রিষ্টানদের যা কিছু পাওয়ার যোগ্য তা যিহুদির মধ্যে দিয়ে খ্রিষ্টানদের কাছে এসেছে তা একদম অস্বীকার করা যায় না। যেমন খ্রিষ্টানদের বাইবেল একটি যিহুদির পুস্তক, এবং খ্রিষ্টানদের ত্রাণকর্তা, মুক্তিদাতা, উদ্ধারকর্তা একজন যিহুদি। যিহুদিরা, বাইবেল অনুসারে, “ঈশ্বরের মনোনীত লোক” এবং ঈশ্বর তাদের খুব ভালোবাসতেন। তাছাড়া খ্রিস্টানদের ইস্রায়েল জাতিকে সমর্থন করার আরেকটি কারণ হল অব্রাহামের প্রতি ঈশ্বরের আশীর্বাদ কথা, যেখানে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়ে যে; যারা অব্রাহামকে আশির্বাদ করবেন, ঈশ্বর তাদের আশির্বাদ করবেন, এবং যারা অব্রাহামকে অভিশাপ দিবেন, ঈশ্বর তাদের অভিশাপ দিবেন অর্থাৎ এখানে ইজরায়েলের কথা বলা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ এই বাক্যে গুলো দেখুন যথা; (আদিপুস্তক ১২:২-৩, আদিপুস্তক ২৭:২৯, গণনাপুস্তক ২৪:৯)।
বাইবেলের ঘোষণা মাধ্যমে এটা তো বোঝা যায় যে ঈশ্বর তাঁর মনোনীত লোকেদের, অর্থাৎ ইস্রায়েল জাতির প্রতি তাঁর ভালবাসা এবং যত্ন নিয়ে থাকেন। খ্রিস্টান হয়ে আমাদের উচিত ঈশ্বরের মনোনীত লোকদের সমর্থন করা। একটা বিষয় এখানে বলে রাখাও ভালো হবে যে এর অর্থ এই নয় যে আরব জাতির সাথে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে তারা যে পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে আমরা অবশ্যই সমর্থন করা করি বলে! ইসরায়েল একটি জাতি হিসাবে যা বাইবেলের বিপরীত করে তা আমাদের সমর্থন করতে হবে না, আমাদের অবশ্যই ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে সমর্থন করা উচিত। তাছাড়া বাইবেল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে দ্বন্দ্ব সর্বদা ইসহাক এবং ইশ্মায়েলের বংশধরদের মধ্যে সম্পর্কের বিশিষ্টতা থাকবে। দুঃখের বিষয়, এই দ্বন্দ্ব চলতেই থাকবে যতক্ষণ না স্বয়ং ঈশ্বর অর্থাৎ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট জাতিদের বিচার করার জন্য পৃথিবীতে ফিরে আসেন এবং পৃথিবীতে তাঁর সহস্র বৎসরের অর্থাৎ এক হাজার বছরের শান্তির রাজত্ব স্থাপন করেন।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।