Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বাইবেল ফ্রেন্ডশিপ ডে সম্পর্কে কি বলে?| What does the Bible say about Friendship Day?

বাইবেল বন্ধুত্ব দিবস সম্পর্কে কী বলে?

লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।

আজ বিশ্ব বন্ধু দিবস। প্রতি বছর ন্যায় এই বছর আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার সারা বিশ্বে একযোগে বন্ধু দিবস পালন করে থাকে। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আজকাল এই আধুনিক যুগের সংযোগে বন্ধু শব্দ বদলে যেন সকলে ইংরেজীতে  ফ্রেন্ড শব্দটিতে বেশি অভ্যাস্ত হয়ে গেছে। তবে কীভাবে এই দিন পালনের জন্য স্বীকৃতি তা অনেকের অজানা। আমরা সংক্ষেপে ধারণা দিতে চাই।

বন্ধুত্ব দিবস ইতিহাসঃ

Image by Sasin Tipchai from Pixabay

 কথিত রয়েছে যে, ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এক ব্যক্তি নিহত হন। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। বন্ধু বিয়োগের ঘটনায় আঘাত সহ্য করতে না পেরে, সেই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। বন্ধুর জন্য বন্ধুর অ‍াত্মত্যাগের ঘটনায়, সেই সময় চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সেই বছরই মার্কিন কংগ্রেস বন্ধুত্বের প্রতি, সম্মান জানিয়ে আগস্টের প্রথম রবিবারকে, বন্ধু দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। অন্য এক সূত্র অনুযায়ী, বন্ধু দিবসের শুরু হয়েছিলো আরও আগে। ১৯১৯ সালে আগস্টের প্রথম রবিবার বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে কার্ড, ফুল, উপহার বিনিময় করতো। ১৯১০ সালে জয়েস হলের প্রতিষ্ঠিত হলমার্ক কার্ড, বন্ধু দিবস পালনের রীতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছিলো। সম্প্রতি বন্ধু দিবসের দিন তারিখ বদলানো হয়েছে। ১৯৫৮ সালে, অ‍ান্তর্জাতিক নাগরিক সংগঠন, ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড বিশ্বে শান্তির উদ্দেশ্যে প্যারাগুয়েতে, ৩০ জুলাইকে এই দিন পালন করার প্রস্তাব দেয়া হয়।

১৯৫৮ সালে, ২০ জুলাই, ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডের, প্রতিষ্ঠাতা ড. ৠামন আর্তেমিও ব্রেঞ্চো, বন্ধুদের সঙ্গে প্যারাগুয়ের পুয়ের্তো পিনাসকোতে, এক নৈশভোজে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সে রাতেই ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডসিপ ক্রুসেড প্রতিষ্ঠা পায়। এই প্রতিষ্ঠানটি ৩০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধু দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠায়। ২০১১ সালের ২৭ জুলাই, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধু দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। তবে এখনও ভারতবাংলাদেশমালেশিয়ায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বন্ধুত্ব দিবস আগস্ট মাসে, প্রথম রবিবারই পালিত হয়ে আসছে। ১৯৩৫ সালে মার্কিন কংগ্রেস বন্ধুদের সম্মানে একটি দিন উত্‍সর্গ করার কথা মাথায় রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে আগষ্টের প্রথম রবিবারকে জাতীয় বন্ধু দিবস বলে ঘোষণা দেয়। একই সময়ে, দিনটি সরকারী ছুটি হিসাবে মনোনীত করা হয়। 

তখন থেকে প্রতিবছর দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে বিশেষ করে প্যারাগুয়েতে ঘটা করে বন্ধু দিবস পালিত হয়। ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অন্যান্য দেশে এ দিনটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। বন্ধু দিবস ঘোষণার উত্‍পত্তি বা কারণ ঠিক কী তা সঠিকভাবে বলা মুশকিল। তবে তত্‍কালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা অর্থাত্‍ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, বিশৃঙ্খলা ও হিংস্রতা মানুষের মধ্যে অনেকটাই বন্ধ‍ুর অভাব তৈরি করেছিলো বলে অনেকের অভিমত। ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধু দিবস নির্ধারিত হয়েছিলো বলে অনেকে মনে করেন। আপনার এতক্ষণ দেখলেন ও জানলেন যে, বন্ধুত কি? বন্ধুত্বের দিবস কিভাবে কখন থেকে প্রচলন শুরু হয়েছে? এখন এই বিষয় নিয়ে বাইবেল ভিত্তিক দেখে নেওয়া যাক! অবশ্যই প্রিয়তমেরা ঈশ্বর/ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট কখনও বন্ধুত্বের বিরুদ্ধে নয়। বাইবেল বন্ধুত্বের স্বীকৃতি দিয়েছেন যেমন বাক্য বলে; (হিতোপদেশ ২৭:১০)। 

এই বাক্যেয় ঈশ্বর দায়ূদের পুএ শলোমনের দ্বারায় বলছেন যেন আমরা বন্ধুকে ত্যাগ না করি। কোথায় বলতে গেলে এই বাক্যের পূর্ণতা প্রভু যীশুর মাধ্যমে দেখতে পাই। কারণ প্রভু যীশুই তো ঈশ্বর ছিলেন। তিনি দায়ূদের পুএ শলোমনের দ্বারা এক বলছেন। আর তিনি অন্য কিছু করবেন তা তো হতে পারে না তাই না! হয়তো এখানে কিছু পক্ষ যীশুকে ঈশ্বর মানতে নারাজ। সমালোচকদের মতো তাদের ও দাবি যে, যীশু কোন ঈশ্বর নয়। তিনি একজন ভাববাদী/ নবী, প্রচারক, ঈশ্বরের পুএ, মানুষের পুএ কিন্তু ঈশ্বর নয়। সমালোচকদের সমস্যা বোঝা যায় কিন্তু বিশ্বাসী হয়েও অনেকে কেন বুঝতে চায় না! যীশু কে ছিলেন? উওর জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন। “যীশু কে ছিলেন?” যীশুকে ঈশ্বর কেন বলা হয়? এই বাক্যেয় যীশুর বন্ধুর ভালোবাসা  দেখতে পাওয়া যায় যথা; (যোহন ১১:১১)। 

প্রভু যীশু এখানে বলতে পারতেন, থাক কি হয়েছে মারা গেছে তো? কিন্তু না, প্রভু যীশু শিষ্যদের বললেন আমাকে যেতে হবে। প্রভু যীশু যে ঈশ্বর ছিলেন, তা লাসারের এই ঘোটনা থেকে প্রকাশ পাচ্ছিল। প্রভু যীশু মৃত্যু লাসারকে, জীবন দান করার মাধ্যমে নিজের, ঈশ্বরত্ব গৌরব প্রদান করতে ছিলেন। প্রভু যীশু, বন্ধু লাসারকে, এতো  ভালোবাসতেন যে, স্বয়ং প্রভু যীশু লাসারের জন্য কেঁদে বসে ছিলেন যেমন বাক্য বলে যথা;

[যোহন ১১:৩৫যীশু কাঁদিলেন। 

এমনি স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট, আমাদের বন্ধুত্বের জন্য, একদিন এই পৃথিবীতে নির্দোষ হয়েও জীবন দিয়েছিলেন। বন্ধুর, পাপের বোঝা নিজের কাঁধে বহন করে, কষ্টের যাতনার মধ‍্যে, 
ক্রূশ কাঠে জীবন দিলেন, যেন বন্ধুর কষ্টের যাতনা ভোগ করতে না হয় যেমন বাক্য বলে যথা; (
রোমীয় ৫:৮)। তাই (যোহন ১৫:১৪ পদ) অনুয়ায়ী হলাম যীশুর বন্ধু। যীশুর বন্ধু হতে গেলে আমাদের যীশুর কথা হিসাবে চলতে হবে যথা; (যোহন ১৫:১২)। প্রেম বলতে প্রভু যীশু, জগতের প্রেমের কথা বলছেন তা কিন্তু নয়, যা আমাদের যুবক ও যুবতীদের মাধ্যমে দেখতে পাই। যেই প্রেমে শুধু মাত্র শারিরীক চাওয়া পাওয়া টাই বেশি থাকে, সেই প্রেম নয়। প্রভু যীশু, বন্ধু লাসারের মাধ্যম যেই প্রেম প্রকাশ করে ছিলেন, সেই প্রেমের কথা বলেছেন। সাধূ পৌল, এই প্রেমের বিষয়, খুব সুন্দর বিস্তারিত বুঝিয়ে ছিলেন যেমন বাক্য বলে; (১ করিন্থীয় ১৩:৪-৭)। 

পুরাতন নিয়মে ও ঈশ্বর, নিজেকে বন্ধুর মাধ্যমে প্রকাশ করতেন, ও তাঁর মনোনীত লোকদের বন্ধু হিসাবে দেখতেন যেমন বাক্য বলে যথা; (
যাত্রাপুস্তক ৩৩:১১২ বংশাবলি ২০:৭যিশাইয় ৪১:৮যাকোব ২:২৩)। প্রভু যীশু আমাদের বন্ধুত্বর মহত্ব বুঝিয়েছেন বন্ধু কেমন হওয়া চাই বলে! তবে হাঁ কেমন ধরনের বন্ধু হওয়া চাই বাইবেল এটাও আমাদের শিক্ষা প্রদান করেন যেমন বাক্য বলে যথা; (হিতোপদেশ ১৩:২০হিতোপদেশ ২২:২৪)।
এই জগতে আমাদের বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী উভয় বন্ধু থাকে। আমাদের অনেক অবিশ্বাস বন্ধু রয়েছে তাদের সঙ্গে উঠা বসা হয়। তবু ও আমরা আমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে চুক্তি করি না। তাদের অধিক ফালুত সময় দেই না। বিশ্বাসীদের সময় অনেক মহত্ব রাখে। আমরা যদি তাদের বন্ধুত্বের মধ্য ডুবে যাই, কি জানি আমরা ঈশ্বরের, কাছ থেকেও দূর হয়ে যেতে পারি, তাই ঈশ্বরের বাক্য আমাদের সতর্ক করে ও রাখে যেমন বাক্য বলে; (২ করিন্থীয় ৬:১৪)। 

ঈশ্বরের বাক্য, আমাদের খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসীদের সঙ্গে সংযত হতে বলেন, অর্থাৎ যেন অনুধাবন করি যথা; (২ তীমথিয় ২:২২)। প্রভু যীশু সকলকে বন্ধু বলেন যথা; (যোহন ১৫:১৫)। এই বাক্যের সাহায্য বন্ধুত্ব সম্পর্ক, এমন একটি সম্পর্ক যা, একের অপরকে মন খুলে সকল কথা বলতে পারি। তবে এখানে আমরা কিছু কথা বলতে চাই। অনেক ছেলেদের, ভালো মেয়ে বন্ধু ও থাকে, ঠিক তদ্রুপ মেয়েদের ও ভালো ছেলে বন্ধু থাকে। আমরা, দেখেছি অনেক মেয়েরা, ছেলেদের রে, রা, তুই-তাই করে কথা বলে, ঠিক তেমনি ছেলেরা ও মেয়েদের রে-রা, তুই-তাই করে কথা বলে। এই ভাষাশালীর মাধ্যমে কথা বলা অনুচিত। একটু বোঝাই ঈশ্বর, পুরুষ ও নারী দুই জনকে আলাদা সৃষ্টি করেছেন। গঠন গত আকৃতি ভিন্ন, কিন্তু মানুষ হিসেবে দুই জন সমান‌। ধরুন আপনি একজন পুরুষ, আপনি আপনার খুব গোপনীয় কথা, যেমন একজন পুরুষ (ছেলে) বলতে Comfortable তদ্রুপ কি আপনি আপনার খুব গোপনীয় কথা নারী (মেয়ে) কাছে Comfortable হতে পারবেন কি? মানে মন খুলে সব কিছু বলতে পারবেন কি? নিশ্চয়ই না।

তবে হাঁ বর্তমান দিনে অনেকে সন্মান বিষয়কে মহত্ব রাখে না, তাই কিছু লোক Comfortable ও হয়ে যায়। বাইবেল হিসেবে পুরুষ ও নারী, এক একজন কে একের অপরকে কাছে ঈশ্বর বশিভুত করেছেন। যেন সকলে মহত্ব বুঝুক। হয়তো ঘনিষ্ঠ বন্ধু হতে পারে তবুও রে-রা, তুই-তাই কথা বলা অনুচিত হবে। যখন কোন নারী (মেয়ে) পুরুষকে রে-রার মাধ্যমে কথা বলে, তখন এই ভাষাশালীর মাধ্যমে একটা বিষয় প্রকাশ পায় যে, সেই পুরুষ (ছেলে) তার সমরুপ হয়ে উঠে, অর্থাৎ সে ও যেন নারী (মেয়ে)। সন্মানের সাথেই কথা বলা উচিত হবে। তবে হাঁ পুরুষ চাইলে পুরুষকে বলতে পারে তদ্রুপ নারী চাইলে নারীকেই রে-রা বলতে পারে।

উপসংহারঃ
- বাইবেলে কোথাও উল্লেখ নেই যে, বন্ধুত্ব দিবস উদযাপন করা উচিত বলে! বাইবেল শুধু মাত্র বন্ধুত্ব মহত্ত্ব শিখিয়েছেন, যদি বন্ধ হতে হয়ে কেমন বন্ধ হওয়া উচিত বলে! বন্ধুত্বের কোন বয়স মেনে হয় না। ছোট বড় সবাই বন্ধু হতে পারে। তবে হাঁ বয়সের ব্যবধানের বশতঃ ছোটদের প্রতি স্নেহ ও বড়দের প্রতি সন্মান থাকা আবশ্যকতা। বন্ধু এমন একটি ভালোবাসা যা জাতি, ধর্ম, রং-রুপ সকল মানুষের মাঝেও বন্ধুত্বের ভালোবাসা দৃঢ় করে। সুতরাং আপনি বন্ধুত্ব দিবস উদযাপন করলেই যে ভুল হবে তা কিন্তু নয়। আপনি বন্ধুত্ব দিবস পালন করুন বা না করুন আপনার ব্যক্তিগত। বাইবেল আমাদের স্বতন্ত্র দিয়েছেন এই বাক্যের অনুরূপ; (
রোমীয় ১৪:৫)। 

ঈশ্বর সকলকে বোঝার জ্ঞান প্রদান করুন।
আমেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ