মরিয়ম কি প্রার্থনার মধ্যস্থতাকারী?
✍️ এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
এই বিষয় বস্তুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বস্তু তাই অনুগ্ৰহ করে সকলে সম্পূর্ণ লেখা পড়ার চেষ্টা করুন। এই বিষয় বস্তু বিতর্কিত একটি বিষয় বস্তু। আপনারা হয়তো দেখেছেন রোমান ক্যাথলিক যারা নিজেকে খ্রিস্টান তো দাবি করে কিন্তু বাস্তবে তারা কোন খ্রিষ্টান নয়। জগত এদেরকে (রোমান ক্যাথলিকদের) খ্রিষ্টান মনে করে। রোমান ক্যাথলিক ভক্তি ভরে বেদনার সহিত নিজের চাওয়া-পাওয়ার কথা মরিয়মকে বলে থাকে।
Image by 3965435 from Pixabay |
তাদের হিসেবে তারা মনে করে থাকে মরিয়ম-ই আমাদের মধ্যস্থতা হয়ে প্রার্থনা যীশুর কাছে নিয়ে যান। তাদের এই দাবিকে সঠিক প্রমাণিত করার জন্য, গালীলের কান্না নগরে ঘটনা উক্তি দিয়ে থাকে। যেখানে যীশু জল দ্রাক্ষারসে পরিণত করে ছিলেন। রোমান ক্যাথলিকদের দাবি হিসেবে তারা বলে; যেমন যীশু মরিয়মের আজ্ঞার ফলেই জল দ্রাক্ষারসে পরিণত করে ছিলেন। ঠিক তদ্রুপ মরিয়মের কাছে প্রার্থনা করলে, মরিয়ম যীশুর কাছে প্রার্থনা নিয়ে যান। এর কারণ হিসেবে তারা বলে মরিয়ম তো যীশুর মা ছিলেন। যীশু তাঁর মাকে ফিরিয়ে দিতে পারে না, তাই মরিয়মের কাছে প্রার্থনা করলে মরিয়ম আমাদের প্রার্থনার মধ্যস্থাতা হয়ে যীশুর কাছে প্রার্থনা নিয়ে যাবেন। পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলি বাস্তব তো এটাই রোমান ক্যাথলিক যেই ঘটনাকে নিজের সুবিধার জন্য উক্তি নিয়ে থাকে। সেখানে সেই ভাবে কোনো কিছু বলাই হয়নি। সেটা রোমান ক্যাথলিকদের নিজের সুবিধামত ব্যাখা। সেখানে যীশু কোনো মরিয়মের কথা শুনে জল দ্রাক্ষারসে পরিণত করেনি। বরং যীশু নিজের মহিমা প্রকাশ করার জন্য জল দ্রাক্ষারসে পরিণত করেছিলেন (যোহন ২:৪,১১)। এখন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক তাহলে মরিয়ম কি সত্যিই আমাদের প্রার্থনা মধ্যস্থতাকারী?
উওর না। মরিয়ম আমাদের প্রার্থনার মধ্যস্থতাকারী হতে পারে না। কারণ স্বয়ং মরিয়ম পাপী মানুষ ছিলেন যেমন বাক্য বলে; (লুক ১:৪৬-৪৭)। এখানে রোমান ক্যাথলিকরা বলে নানা মরিয়ম কোন পাপী মানুষ ছিলেন না। তাছাড়া এই বাক্যেয় কই এখানে তো বলা হয়নি মরিয়ম পাপী মানুষ ছিলেন বলে! আপনাদের জানিয়ে রাখি অবশ্যই সেই ভাবে কোনো কিছু বলা হয়নি। এই বাক্যেয় কি বলা হয়েছে তা আগে বিস্তারিত বোঝানো হবে। (লুক ১:৪৬-৪৭) এই বাক্যেয় দেখুন কি লেখা রয়েছে বলে! এই বাক্যেয় লেখা রয়েছে মরিয়ম বলছেন; “আমার ত্রাণকর্ত্তা” এই বাক্যের অর্থ হল এটাই মে, এখানে মরিয়ম তিনি তার পরিত্রাণের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন। ঠিক আমাদের বাকি মানুষদের মতো মরিয়মের, একজন পরিত্রাতা, একজন মুক্তিদাতা প্রয়োজন। সুতরাং মরিয়ম একজন পাপী মানুষ ছিলেন। মরিয়ম জানতো যে, আদমের পাপের বশত সে পাপী ছিলো তাঁর ও ত্রাণকর্ত্তা প্রয়োজন। মরিয়ম যখন গাব্রিয়েল দূত মাধ্যমে শুনলেন, যে এই জগতের ত্রাণকর্তা তাঁর মাধ্যমে আসতে চলেছে। সেই কথা শুনে মরিয়মের খুশির কোন সিমা ছিলো না, সাধারণত ভাষায় বলতে গেলে খুশির কোন ঠিক-ঠিকানা ছিলোনা। মথি ১২:৪৭-৫০ পদ অনুযায়ী বলা যায় যীশু নিজেই ইঙ্গিত করেছেন যে মরিয়ম মুক্তি বা মধ্যস্থতা সম্পর্কিত কোন বিশেষ স্থান রাখেন না। যীশুর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের পরে, মরিয়ম পঞ্চাশওমীর আগে প্রার্থনা ও অনুনয় চালিয়ে যাওয়া বিশ্বাসীদের সম্প্রদায়ের অংশ ছিলেন যেমন বাক্য বলে; (প্রেরিত ১:১৪)।
এখানে স্বয়ং মরিয়ম প্রার্থনায় ছিলেন। মরিয়ম মাধ্যম কেউ প্রার্থনা করাইনি, আর নাই বা কেউ মরিয়মের কাছে প্রার্থনা করে ছিলো। সুতরাং সুস্পষ্ট হয় যে, মরিয়ম আমাদের প্রার্থনার মধ্যস্থাতাকারী নয়। প্রার্থনার মধ্যস্থাতাকারী স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যেমন কিছু বাক্য বলে যথা; (১ তীমথিয় ২:৪-৫ BCV, ইব্রীয় ১২: ২৪, যোহন ১৪:১৩-১৪ BENGALCL-BSI)।
উপসংহারঃ আমরা বাক্য থেকে সুস্পষ্ট হলাম, যীশুই আমাদের একমাত্র মধ্যস্থতাকারী এবং মারিয়া/ মরিয়ম নয়। অবশ্যই মরিয়ম পুরুষ পরম্পরায় ধন্য কারণ তিনি আমাদের উদ্ধারকর্তা/ ত্রাণকর্তা/ মুক্তিদাতাকে ধারণ করে ছিলেন। কিন্তু তিনি ঐশ্বরিক নন। তিনি অর্থাৎ মরিয়ম আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করেননি এবং মুক্তির প্রক্রিয়ার অংশ করা যাবে না। কিন্তু রোমান ক্যাথলিক যেই ভাবে মরিয়মকে মহিমা মণ্ডিত করে থাকে তা সম্পূর্ণ ভুল। যীশু হলেন মানুষ এবং ঈশ্বরের মধ্যে নিখুঁত এবং একমাত্র মধ্যস্থতাকারী, কারণ তিনি ঈশ্বরের পাপহীন পুত্র। মরিয়ম নিষ্পাপ ছিল না। মরিয়ম নির্দোষতা বা স্বর্গে তার অনুমানের দাবিকে সমর্থন করার মতো কোনো শাস্ত্র নেই। এই মতবাদ পোপ ঘোষণার ফলে গৃহীত হয়েছিল।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।