Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ঈশ্বর কি পুরুষ নাকি মহিলা?| Is God male or female?

ঈশ্বর কি পুরুষ নাকি মহিলা?

লেখকঃ এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।

অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রশ্ন করছেন, ঈশ্বর কি পুরুষ না মহিলা? সমস্যা তো তখন হয়ে গেছিলো যখন এই প্রশ্ন ব্রিটেন পার্লামেন্ট তুলে ধরা হয়েছিল। ব্রিটেনের একজন মহিলা সাংসদ যার নাম Rachel Treweek যিনি Church of England (Anglican) একজন বিশোপ। উনি একদিন এই প্রশ্ন House of Lords ও তুলে ধরেছিলেন। সত্যি এই প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি দেখাও গেছে অনেক খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসীরাও এই প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে ও জানেন না। চলুন বাইবেল এই সম্পর্কে কি বলে তা জানা যাক। 
Image by Tumisu from Pixabay

প্রথমেই আমাদের বুঝতে হবে ঈশ্বরের প্রকৃত স্বরূপ। ঈশ্বর অবশ্যই একজন ব্যক্তি, কারণ তিঁনি সমস্ত মানবিক গুণাবলীর অধিকারী এবং তাঁর সাথে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। এবং তাঁর কাজের প্রমাণ শাস্ত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়া পবিত্র শআস্ত্র, পবিত্র  বাইবেল গভীর অনুসন্ধানে দুটি অত্যন্ত স্পষ্ট সত্য প্রকাশ করে।  প্রথমটি হল; ঈশ্বর আত্মা। অর্থাৎ ঈশ্বর কোনো মানব চরিত্র বা সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকেন না।  দ্বিতীয়তটি হল; পবিত্র শাস্ত্র, পবিত্র বাইবেলের বাক্যে একমত যে, ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে একজন পুরুষ মানুষ হিসাবে নিজেকে মানবজাতির কাছে প্রকাশ করেছিলেন। হয়তো অনেক লোকের এটা বিশ্বাস করতে দ্বিধা বোধ হয়, আর চিৎকার করে বেড়ায় যে, যীশু কোন ঈশ্বর নয়, কিন্তু বাইবেল এটাই সুস্পষ্ট ভাবে বলে যে যীশু-ই ঈশ্বর ছিলেন যেমন এই বাক্য ও সুস্পষ্ট ভাবে বলে যথা; (যোহন ১:১ SBCL, যোহন ১:১৪ SBCL)। 

যীশু কে? এই বিষয় বস্তু সম্পর্কে পূর্বেই বিস্তারিত ভাবে পোস্ট  দেওয়া হয়েছে। যদি এই বিষয় সম্পর্কে বাইবেল ভিওিক বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য ইচ্ছা থাকে তাহলে লিঙ্ক দেখুন যথা; “যীশু খ্রীষ্ট কে ছিলেন? এমন সময় আসবে, যখন অনেকেই যীশুকে নিয়ে বিদ্রুপ করবে। ফলে ঈশ্বরের লোকেরা বিভ্রান্ত না হয় তাই সেই ভন্ডদের চিহ্নিত করার জন্য ঈশ্বর খ্রিষ্টানদের কিছু কথা বলেছেন যেমন এই বাক্যে বলে যথা; (১ যোহন ৪:২-৩ IRVBEN)। পবিত্র শাস্ত্র, আমাদের বলে ঈশ্বর আত্মা যেমন এই বাক্যে বলে যথা; (যোহন ৪:২৪ BCV)। 

বাইবেল বলে যে ঈশ্বর যেহেতু আত্মা, তাই তিনি শারীরিকভাবে মানুষের বৈশিষ্ট্যের অধিকারী নন।  যাইহোক, মানুষের জন্য ঈশ্বরকে বোঝা সহজ করার জন্য, কখনও কখনও ঈশ্বরের চরিত্রের মানবিক দিকটি পবিত্র বাইবেল লেখায় উপস্থাপন করা হয়। আমরা জানি যে ঈশ্বর হলেন আত্মা এবং কোনো শারীরিক বা জাগতিক গুণাবলীর অধিকারী নন। ফলে ঈশ্বর কিভাবে মানুষের কাছে নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন তার কোন সীমা নেই। ঈশ্বর নিজের সম্পর্কে যা কিছু প্রকাশ করেছেন তা পবিত্র বাইবেলে লেখা আছে এবং তাই এটিই ঈশ্বর সম্পর্কে জ্ঞানের একমাত্র উৎস। এছাড়াও আমরা যদি পবিত্র বাইবেল অনুসন্ধান করি, তাহলে আমরা দেখতে পাব যে ঈশ্বর কোনো না কোনোভাবে মানুষের কাছে নিজেকে প্রকাশ করেছেন, বাইবেলে অনেক ঘটনা লিখিত আছে।

পবিত্র বাইবেলে আনুমানিক প্রায় ১৭০ বার ঈশ্বরকে “পিতা” হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে, আবার এই কথার হিসেবে প্রশ্ন দাঁড়ায়  যদি কেউ একজন পুরুষ না হয় তবে কি কেউ পিতা হতে পারে? আপনি বলতে পারেন অবশ্যই না!  ঈশ্বর যদি একজন নারী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করতে চাইতেন, তাহলে পিতা” শব্দের পরিবর্তে মা বা মাতা শব্দটি ব্যবহার করা হতো। পবিত্র  বাইবেলে পুরাতন নিয়ম এবং নতুন নিয়মে বহুবার ঈশ্বরকে বোঝাতে পুরুষবাচক সর্বনাম” ব্যবহার করা হয়েছে।  প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বরকে অনেকবার পিতা” বলে সম্বোধন করেছেন। এবং তাছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রেও তিঁনি ঈশ্বরকে বোঝাতে পুরুষবাচক সর্বনাম”  ব্যবহার করেন।  যীশু শুধুমাত্র সুসমাচার পুস্তকে অর্থাৎ মথি, মার্ক লুক ও যোহন  পুস্তকে ঈশ্বরকে উল্লেখ করার জন্য পিতা” শব্দটি ব্যবহার করেছেন প্রায় ১৬০ বার।

আজ থেকে দুই হাজার বছর পূর্বে যখন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এই জগতে এসছিলেন। তখন প্রভু যীশুকে নিয়ে যিহূদীদের অনেক সমস্যা হয়ে যেতে, কারণ প্রভু যীশুর খ্রীষ্টের ফলে তাদের ধর্মের ব্যবসার প্রভাব পড়ে ছিল। তখন যিহূদীদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে নানা বাদানুবাদ হয়েই থাকতো, তো একদিন যিহূদীরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে জিজ্ঞাসা করল; তুমি যদি খ্রীষ্ট/মসীহ হও তবে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দাও” (যোহন ১০:২৪) পূর্বে এই কথার উত্তর প্রভু যীশু জানিয়ে ছিল, তার সত্ত্বেও আবার প্রভু যীশুকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছিল। প্রভু যীশু নিজের অধিকার সম্পর্কে বোঝাতে গিয়ে তিনি কে ছিলেন? তাঁর নিজের সম্বন্ধে বিবৃতি কি ভাবে দিয়েছেন এই বাক্য দেখুন যথা; (যোহন ১০:৩০)। 

প্রভু যীশু তাঁর নিজের সম্পর্কে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা হল আমি এবং পিতা, আমরা এক।  প্রকৃত যীশু খ্রীষ্ট সমগ্র বিশ্বের পাপের মূল্য পরিশোধ করেছেন, ক্রুশে তাঁর জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন মানব শরীর ধারণ করে। এই পৃথিবীতে আসলেন। পিতা ঈশ্বরের মতো যীশুও মানুষের কাছে একজন পুরুষ হিসাবেই আবির্ভুত হলেন। পবিত্র বাইবেলে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যেখানে যীশু খ্রীষ্টকে ঈশ্বর হিসাবে বর্ণনা করার জন্য পুরুষবাচক বিশেষ্য এবং সর্বনাম ব্যবহার করা হয়েছে। নুতন নিয়মের পুস্তক তা প্রেরিত পুস্তক থেকে প্রকাশিত বাক্যে পর্যন্ত প্রায় ৯০০টি পদ রয়েছে যা সরাসরি ঈশ্বরকে বোঝাতে গ্রীক পুংলিঙ্গ শব্দ (Θεὸς-থিওস) ব্যবহার করে।

পবিত্র বাইবেল ঈশ্বরকে বর্ণনা করার জন্য অসংখ্য পুংলিঙ্গ উপাধি, বিশেষ্য এবং সর্বনাম ব্যবহার করা হয়েছে। পুরাতন নিয়ম নবী এবং নতুন নিয়মের প্রেরিতরা ঈশ্বর এবং যীশু খ্রীষ্টকে পুংলিঙ্গ সর্বনামের নাম এবং উপাধি দিয়ে সম্বোধন করেছেন। ঈশ্বর নিজেকে এমনভাবে প্রকাশ করতে পছন্দ করেছিলেন যাতে লোকেরা সহজেই বুঝতে পারে তিনি আসলে কে!  যখন স্বয়ং ঈশ্বর আমাদের তাঁকে জানতে সাহায্য করতে চান, তখন ঈশ্বরকে একটি বক্সের ভিতরে আটক করে, তাঁকে জোর করার চেষ্টা করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ তার উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করাও ঠিক নয়, কারণ সেগুলো তার চরিত্র বা বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ