Should Christians eat offerings to idols?
লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
আজকের এই বিষয় বস্তু অর্থাৎ খ্রিস্টানদের কি প্রতিমা প্রসাদ খাওয়া উচিত সত্যি প্রত্যেকে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের জন্য, তা নতূন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হউক বা পরিপক্ক বিশ্বাসী হউক তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রিয় দেশ ভারতবর্ষ হলো এক উৎসব প্রিয় দেশ। আর আমাদের প্রিয় ভারতের মানুষরা ও হৃদয়গ্ৰাহী প্রিয়। তো যখনি আমাদের হিন্দু ভাই ও বোন মন্দির বা ঘরে পূজা করে বা কোনো উৎসব আসে, তখন তারা সেই আনন্দ/ সুখকে প্রেমের সহিত প্রসাদ দিয়ে ভাগ করে থাকে। তখন একজন বিশ্বাসী নানা সমস্যার মধ্যে সম্মূখীন হয়ে যায়, আর মনে মনে ভাবতে থাকে আমি কি প্রসাদ গ্ৰহণ করতে পারবো? যদি গ্ৰহণ না করি কোথায় আমার সেই বন্ধুর খারাপ না লেগে যায়! সেই খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসী মনে মনে এটাও ভাবতে পারে, ভাই তোমাদের যখন খ্রিস্টমাস আসে, আর কেক দাও তা আমরা গ্ৰহণ করি। কিন্তু এখন আমি যখন দিচ্ছি কেন গ্ৰহণ করবে না? সত্যি এই পরিস্থিতি এমন একটি পরিস্থিতি আমরা কি করবো কিনা করবো কিছু নির্ণয় নিতে পারি না।
পাঠকেরা এই পরিস্থিতির সময় আমরা ও ভুক্ত ভোগী হয়েছি। এই বিষয়কে নিয়েই আমরা মনোনিবেশ করার চেষ্টা করবো, বাইবেল আমাদের কি বলে! প্রসাদ খাওয়া উচিত কিনা! উওর হাঁ কি না বলার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন প্রসাদ কথার অর্থ কি? প্রসাদ কি? তবেই উওরটি আমাদের কাছে উওর সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। তা সংক্ষেপে আলোচনা করা হচ্ছে।
Image by wikimedia |
প্রসাদ কথার অর্থ কি?
প্রসাদ শব্দটি মূলত সংস্কৃত শব্দ Prasada থেকে আগাত।প্রসাদকে প্রসাদ বা প্রসাদম ও বলা হয়ে থাকে। যার অর্থ হল দেব-দেবীদের/ ভগবানদের উদ্দেশ্য উৎসর্গ করা, এবং যা দেব-দেবীদের/ভগবানদের আশীর্বাদ নেমে আসা একেই এক কথায় প্রসাদ বলা হয়।
প্রতিমা প্রসাদ কি?
প্রসাদ হল দেব-দেবতাদের উদ্দেশ্য উৎসর্গ করা উপহার এবং ভক্তরা সেই উৎসর্গ করা উপহার ভোজন করে। সাধারণত প্রসাদ পূজ-পাঠ করার পরে সেবন/খাওয়া হয়। প্রসাদের আক্ষরিক অর্থ হল অনুগ্রহমূলক উপহার। ভগবদ্গীতা ভিত্তিতে প্রসাদ খাওয়া হলে কি হয়, কিনা হয় এই অধ্যায় ও শ্লোকে বর্ণিত রয়েছে, তা আপনারা দেখতে পারেন। এখানে কোন কিছু তা আলোচনা করা হয়েছে না (ভগবদ্গীতা ২:৬৫,৩:১৩,৯:২৭)। সংক্ষেপে আমরা প্রসাদের পরিভাষা অনুসরণ করলাম মানে প্রতি প্রসাদ কি তার সিদ্ধান্ত জানলাম।
বাইবেলে প্রতিমা প্রসাদ খাওয়া/ ভোজন নিয়ে কি বলে?
বাইবেলে ঈশ্বর কোন কিছু নির্মাণ করে প্রণিপাত করা মানেই পাপ বলে অভিহিত করেছেন; (যাএাপুস্তক ২০:৩-৫,২৩ দ্বিতীয় বিবরণ ৪:১৫-১৯)। প্রতিমা প্রসাদ খাওয়ার বিষয় নিয়ে পৌল তার পএে খুব সুন্দর বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে ছিলেন; (১ করিন্থীয় ৮:৪-৬)। এই বাক্য আলোচনা করার পূর্বে আমার এই বাক্যর পূর্বের একটি বাক্য অধ্যায়ন করি, তবে বিষয় বস্তু বুঝতে আরোও সহজ হয়ে উঠবে। তাহলে সেই বাক্য দেখে নেওয়া যাক; (১ করিন্থীয় ১:৫-৬)। এই বাক্যের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে করিন্থীয় লোকেরা তারা বাক্যের দ্বারা আত্মিক ভাবে অনেকটাই উন্নত হয়ে গেছিল। তাদের সেই আত্মিক জ্ঞানের ফলে, কথায় বলতে গেল মনেতে অহঙ্কার চলে এসেছিল। তারা মনে করত যে প্রতিমা জগতে কিছু নয়। এটা মানুষের কল্পনায় তৈরি মূর্তি। সেই প্রতিমার কাছে কোনো কিছু উৎসর্গ করলে যে প্রতিমার হয়ে যাবে মানে অশুদ্ধ হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। তাই তারা প্রতিমার কাছে উৎসর্গ করা মাংস খেতে পাপ বলে অভিহিত করত না মানে পাপ বলে মনে করত না। তখন পৌলকে এই বিষয় নিয়ে বোঝাতে হয়েছিল।
এই বাক্যেয় পৌল দুই ধরনের বিশ্বাসীর কথা বলছেন, এক ছিল পরিপক্ক বিশ্বাসী আর এক ছিল নতূন বিশ্বাসী। যারা এখনও বিশ্বাসে পরিপক্ক হয়নি, তাই পৌল পরিপক্ক বিশ্বাসীদের এক সাবধান বানী কথা বলছেন; (১ করিন্থীয় ৮:৯-১০)। এই বাক্যেয় এক জন্য পরিপক্ক বিশ্বাসীকে বলা হচ্ছে যে, তোমার তো জ্ঞান আছে প্রতিমাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা প্রসাদ বিষয় নিয়ে। কিন্তু যে এখনও বিশ্বাসে পরিপক্ক হয়নি অর্থাৎ আত্মিক ভাবে এখনও উন্নত হয়নি, যে ধীরে ধীরে আত্মিক বিষয়ে উন্নতি হচ্ছে, সে যদি তোমাকে দেখে যে তুমি সেই প্রতিমাদের উদ্দেশ্য উৎসর্গ করা প্রসাদ খাও, তাহলে সে তোমাকে দেখে সেই প্রসাদ কি খাবে না! নিশ্চয় খাবে। একজন নতূন বিশ্বাসী ভাববে, যখন সেই পাষ্টার/ পালক/ দাস/ প্রচারক প্রসাদ খাচ্ছে, তাহলে নিশ্চয় আমিও খেতে পারি। তাই পৌল সেই জ্ঞান বান ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য বলছেন যথা; (১ করিন্থীয় ৮:১১-১২)। এখানে সাধু পৌল বলছেন, একজন পরিপক্ক বিশ্বাসীর ফলে যদি একজন নতূন বিশ্বাসীর বিঘ্নর কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যার জন্য খ্রীষ্ট মারা গেছিলেন এবং সেই ব্যক্তি
নষ্ট হয় এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী হবেন সেই পরিপক্ক বিশ্বাসী। তাই পৌল বলছেন যদি আমার ভোজন/ খাওয়ার ফলে অপর ব্যক্তির বিঘ্ন কারণ হয়, তাহলে আমি তা কখনও খাব না; (১ করিন্থীয় ৮:১৩)।
প্রতিমা প্রসাদ এর সম্পর্কে ভুল ধারণা
অনেকে (১ করিন্থীয় ৮:১৩) বাক্যে দেখে বলেন কই এখানে প্রসাদ ভোজন/ খাওয়ার কথা তো উল্লেখ হয়নি। এখানে মাংসর কথা উল্লেখ হয়েছে। হাঁ এখানে মাংসর কথা উল্লেখ হয়েছে। এই মাংস বিষয়কে নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য প্রথমত একটু জানা প্রয়োজন যে করিন্থীয়দের পরম্পরা সংস্কৃত। করিন্থীয় পরম্পরা সংস্কৃতে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম্ম ছিল, এবং সেই ধর্ম্মের মন্দির ও ছিল। তখনকার দিনে বাজারে দুই ভাবে মাংস বিক্রি হতো।
- বাজারে (মার্কেটে) মাংস বিক্রি: যেমন এখনকার দিনে আমরা প্রতিনিয়ত বাজারে মাংস পাই ঠিক সেই ভাবে, তখন কার দিনে মাংস বাজারে দিগুন দামে বিক্রি করা হতো।
- মন্দিরে মাংস বিক্রি: মন্দিরে মাংস বিক্রি হতো খুব অল্প দামে যা দেবতাদের উদ্দেশ্য বলিকৃত করে।
করিন্থীয় লোকেরা বিশ্বাসে এতোটাই উন্নত হয়েছিল যে, তারা কোন কিছু প্রতিমাকে উৎসর্গ করা মাংসকে অপবিত্র বলে মনে করতো না। কারণ তারা বিশ্বাস করত ঈশ্বর ছাড়া দেবতাদের কোন অস্তিত্ব নেই। তাই মন্দিরে গিয়ে সেই বলিকৃত মাংস সস্তায় ক্রয় করত, এবং টাকা ও বাঁচার ধ্যান দিত। কিছু লোকেরা প্রসাদ খাওয়া যায় তা সঠিক প্রমাণিত করার জন্য বাইবেলের কিছু কথা নিজের সহায়তা নিয়ে বশে, কি সেই কথা তা জানতে এই বাক্যে দেখুন; (১ করিন্থীয় ৮:৮)। এই বাক্যে দেখিয়ে বলে এখানে বলা হয়েছে প্রসাদ খেলে যে কিছু হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। সুতরাং আপনি খেতে পারেন বা না খেতে পারেন সেটা আপনার উপরে। এই বাক্যের অর্থ পূর্বেই বোঝানো হয়েছে, তবে পুনরায় বলে দেওয়া হচ্ছে। এই বাক্যে যারা প্রসাদ খাওয়াকে সঠিক মনে, এবং যেইভাবে ব্যাখা করে তা কিন্তু এই বাক্যে কিছু বলে না। এই বাক্যের উওর (১ করি ৮:১৩) পদে রয়েছে। বাইবেল প্রসাদ খেতে কখনও অনুমতি দেইনি। অনেক লোক আবার বলে পরিস্থিতি দেখে খাওয়া যায়।
এই কথা বলা ও ভুল, আপনি বিশ্বাস করুন ঈশ্বর এক, নয় এটা বিশ্বাস করুন ঈশ্বর ছাড়া দ্বিতীয় কোনো ভগবান রয়েছে। আপনি আপনার বিশ্বাসের জন্য স্বাধীন। কিন্তু যে দিচ্ছে সে তো বিশ্বাস করে ঈশ্বর ছাড়াও ভগবান রয়েছে, তাই সেই ব্যক্তির বিশ্বাসের জন্য খাওয়া উচিত নয়। যখন কোনো অবিশ্বাসী ব্যক্তি আমাদের (বিশ্বাসীদেরকে) প্রসাদ দেয়, আর আমরা গ্ৰহণ করি, তখন জ্ঞাতসারে অথবা অজ্ঞাতসারে সেই ব্যক্তির বিশ্বাসকে স্বীকৃত করে থাকি বা সহমত হই। যখন আমরা প্রসাদ ভোজন করি, তখন যেই ব্যক্তি দিল সেই ব্যক্তির বিশ্বাসে সহমত হই। যেই ব্যক্তি আপনাকে প্রসাদ দিচ্ছি সেই ব্যক্তির হিসেবে দেব-দেবতাদের/ ভগবানদের ও বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব আছে। এবং সেই প্রসাদে তাদেরকে ভগবানদের আশীর্বাদ রয়েছে, যেটি সেই ব্যক্তি বিশ্বাস সহকারে তা আপনাকে ভালোবাসার জন্য ও দিয়ে থাকেন। যারা বলে খাওয়া উচিত এখন সেই বিশ্বাসীদের কাছে প্রশ্ন। আপনি কি বিশ্বাস করেন যে, ঈশ্বর ছাড়া অন্য কোন দেবতা এই পৃথিবীতে অস্তিত্ব রয়েছে? ঈশ্বর ছাড়া কি অন্য কোন দেবতারা এই সুন্দর পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা?
ঈশ্বর ছাড়া কি অন্য কোনো দেবতা পাপ থেকে উদ্ধার করতে পারে? যদি আপনি ভোজন করেন তখন এটাই প্রমাণিত হয় আপনি এই সব বিষয় স্বীকার করেন। যখন আমরা অন্য কোনো ধর্মের প্রসাদ স্বীকার করি তখন আমরা তাদের বিশ্বাসে সহমত হই। সেই রকম হিসাবে তো আপনাকে যে কোনো একটা স্বীকার করতে হবে হয় ঈশ্বর/ প্রভু যীশু পথ ও সত্য ও জীবন নয় অন্য কোন দেবতারাই পথ ও সত্য ও জীবন আপনি এই দুই নৌকায় পা দিতে পারেন না; (মথি ৬:২৪)।
উপসংহাঃ - খ্রীষ্টীয় প্রিয়ো, ভাই ও বোনেরা এই সম্পূর্ণ লেখায় আমরা জানলাম যে, খ্রিস্টানদের কি প্রতিমা প্রসাদ খাওয়া উচিত কিনা এই নিয়ে বাক্যে আমাদের শিক্ষা দেয় তা সুস্পষ্ট হয়েছি। বাইবেল আমাদের দুই পান পাএে অংশিদার হতে বারণ করেছেন, তাই সাধূ পৌল এই প্রসাদ খাওয়া নিয়ে সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন; (১ করিন্থীয় ১০:১৯-২১)। বাইবেল পরিস্কার করে দিয়েছে যে, ঈশ্বর প্রসাদ খাওয়াকে সমর্থন করে না। ঈশ্বর আমাদের প্রতিমা প্রসাদ খেতে বারণ করেছেন। মথি ৬:২৪ এই বাক্যের মতোন হয় আপনাকে ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতে হবে, নয় অন্য কোন দেবতাদের/ ভগবানদের বিশ্বাস করতে হবে। বিশ্বাসী হয়ে আমাদেরকে প্রভু যীশুর জন্য দাঁড়ান উচিত। আমাদের প্রেম সহকারে বারন করা উচিত। আমাদের খাওয়া উচিত নয়। কেন খেতে পারবেন না সেই ব্যক্তিকে বোঝান, যখন বোঝাবেন তখন চাইলে আপনি সেই ব্যক্তিকে, সেই সময় প্রভু যীশুর সুসমাচার ও শুনিয়ে দিতে পারেন।
ঈশ্বর সকলকে বুঝার মত জ্ঞান প্রদান করুন। আমেন।।
লাইসেন্স: By AroundTheGlobe - Swaminarayan Sampraday, CC BY-SA 3.0
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।