যীশু কে ছিলেন?
✍️ এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
উওরঃ - E (A+B+C)
কয়েক দিন পূর্বে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেইসবুক পেজে যা “সোমায় মুর্ম্মু ” পেজ এবং আমাদের ক্ষুদ্র একটি খ্রীষ্টীয় গ্রুপ রয়েছে, যেই গ্রুপটির নাম “বাইবেল গভীর ভাবে জানা প্রয়োজন (বাংলায়)।” এখানে এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছিল। দেখা যাচ্ছিল অধিকাংশ সদস্যবৃন্দ ভুল উওর দিয়েই যাচ্ছিল। যদিও বা কয়েজন সঠিক উওর দিতে সক্ষম ছিল। কিন্তু যখনই তাদের বাইবেল ভিত্তিক উওর চাওয়া হচ্ছিল, তখন অধিকাংশ সদস্যবৃন্দ জবাব দিতে পারছিল না। এই প্রশ্নের উত্তর শুধু মাত্র একজন ভাই সঠিকভাবে দিতে সক্ষম ছিলেন যার সোশ্যাল মিডিয়ার নাম হলো; Ullas S Sarker যারা সঠিক উওর দিয়েছেন তাদের আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যারা ভুল উওর দিয়েছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হচ্ছে। আপনারা ভুল উওর দিয়েছেন বলেই তাই আজ সঠিক উওর জানতে পারছেন।
তাছাড়া, আমরা উওর দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষ্য করে দেখেছি যে, কিছু নামধারী খ্রিষ্টান উওর দেওয়ার সময় তর্ক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। সত্যি আমরা নিজেই খুঁজে পাচ্ছিলাম না যে, এটি কি হচ্ছে বলে! প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হচ্ছে, প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সেখানে অযথা তর্ক। এই নামধারী খ্রিষ্টান ফলেই আজ বিশ্বে খ্রিষ্টান বদনাম। এছাড়াও আমরা এটাও দেখছিলাম, কিছু মুসলিম সমালোচক যেন হুড়মুড় করে দৌড়ে এসে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কয়েজন তো আবার চ্যালেঞ্জ করে বশে ফেলছে, কারণ এই প্রশ্নে এমন কিছু অপশন ইচ্ছাকৃত ভাবে রাখা হয়েছিল যেটি মুসলিমদের খুবই ফেভারিট। হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ তারা যে যীশুকে নবী আর মানুষ বিশ্বাস করে এই অপশনের কথা বলা হচ্ছে। যেমনি অপশন দেখতে পেয়েছে ওমনি জবাব দিতে শুরু করছে।
কিছু মুসলিম সমালোচক নিজেকে এত বেশি পণ্ডিত মনে করে বশে এর কারণে অন্য ধর্মাবলম্বীদের পুস্তক সম্পর্কে শিক্ষা দিতে শুরু করে দেয়। এই সমালোচকরা নিজের ধর্মের চশমা পরে অপর ধর্মাবলম্বী পুস্তকের ক্রুটি খুঁজে বেড়ায়। দেখুন এই সমালোচকদের আমায় একটু গ্রাহ্য করি না। কেন আমরা গ্ৰাহ্য করি না তা এই বাইবেলের বাক্যে আমাদের সুস্পষ্ট উওর দিয়ে থাকে যথা; (১ করিন্থীয় ২:১৪ SBCL)। এই বাক্যে পরিস্কার ভাবে বলে ঈশ্বরের নিগড় তথ্য বুঝার জন্য পবিত্র আত্মা সহায়তা প্রয়োজন নচেৎ বাইবেলের বাক্যে বোঝা সম্ভব নয়। তাহলে স্বভাবতই যখন বাইবেলের বাক্যে বোঝা যাবেনা, তখন ভুলভাল কথা বলা স্বাভাবিক। সমালোচকদের উদ্দেশ্যে সংক্ষেপে একটা কথা বলা ভালো যে, নিজের ধর্মের চশমা খুলুন, খুলে তারপর অন্য ধর্মের পুস্তক অনুসন্ধান করুন। জাগগে এখন আমাদের উওরে আশা যাক, নচেৎ অনেকেই বলতে পারে যে কই কোনো উওরে জবাব তো দেওয়া হল না। শুধু শুধু এটি-সেটি কথা বলা ছাড়া আর কিছু তো হল না।
এই উওরটি বাইবেল ভিত্তিক বিস্তারিত ভাবে দেওয়ার পূর্বে একটি বিষয় সুস্পষ্ট করে চাইছি, যেখানে অনেকেই বিভ্রান্তির মধ্যে স্বীকার হয়েছেন। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছিলাম অধিকাংশ লোকেরাই অপশন (A) এর উওর দিয়েছিল, যেখানে এই A অপশনের মধ্যে (ঈশ্বর) শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছিল। আমাদের মনে হয় অপশন (A - ঈশ্বর) উওর ক্ষেত্রে অনেকেই প্রশ্ন গুলিয়ে ফেলছিল। আমাদের প্রশ্ন ছিল যীশু কে ছিলেন? আমরা এটি প্রশ্ন করিনি যে, যীশু কি ঈশ্বর ছিলেন? যদি আমরা এই প্রশ্নটি করতাম, তখন অপশন (A - ঈশ্বর) উওর দেওয়া সঠিক ছিল। কারণ হ্যাঁ যীশু ঈশ্বর ছিলেন। আমাদের প্রশ্নের মধ্যে কিছু ইউনিক বিষয় ছিল যা কয়েজন বিশ্বাসীরাই উপলব্ধি করতে পেরেছিল। আর তাদের মধ্যে একজন ব্যক্তিই সঠিক উওর দিতে সক্ষম ছিল। যীশু কে ছিলেন? এই উওর শুধু এটা বলা ভুল যে, যীশু ঈশ্বর ছিলেন। হ্যাঁ যীশু তো ঈশ্বর ছিলেন সাথে তিনি ১০০% মানুষ ছিলেন এবং ভাববাদী/ নবী ও ছিলেন। এখন অনেকে বলতে পারে তা কিভাবে? বাইবেলের বাক্যে দেখান! ধৈর্য্য ধরুন অবশ্যই বাইবেলের বাক্যে দেখানো হবে।
যীশু ঈশ্বর ছিলেন তা প্রমাণ বাইবেলের এই বাক্যগুলি যথা; (মথি ১৮:২০, যোহন ১:১, ৩, ১৪, ৪:২৬, ৮:২৪, ১০:৩০, ৩৩, ২০:২৬, ২৮, ১ করিন্থীয় ৮:৬, কলসীয় ১:১৫-১৬)। যীশু ১০০ মানুষ ছিলেন তা প্রমাণ বাইবেলের বাক্যে যথা; (যোহন ১:১৪, প্রেরিত ২:২২, রোমীয় ৮:৩, ফিলীয় ২:৫-৮, ১ তীমথিয় ২:৫, ১ যোহন ৪:১-৩, ২ যোহন ৭) তাছাড়া যীশু যে মানুষ ছিলেন তা পুষ্টি করার জন্য যীশু নিজেকে বহুবার মানুষের পুএ বলেছেন যথা; (মথি ৮:২০, ৯:৬, ১১:১৯, ১৬:১৩, ১৮, ১১, ২০:২৮, মার্ক ৮:৩৮, লূক ১৮:৮, যোহন ১:৫১, ৫:২৭, ৬:৫৩, ১২:২৩, ১৩:৩১) এই বিষয়কে আরও পুষ্টি করার জন্য নানা প্রমাণ দিয়েছেন যেমন ধরুন। তিনি মানুষ হিসেবে ক্লান্ত হয়েছেন; (যোহন ৪:৬)। তিনি মানুষ হিসেবে খেয়েছেন; (মার্ক ১৪:৩ লূক ৭:৩৬, যোহন ২১:১২)। তিনি মানুষ হিসেবে উক্তেজীত/উদ্বিগ্ন হয়েছেন; (যোহন ১১:৩৩,১১:২৭,১৩:২১)। তিনি মানুষ হিসাবে ঘুমিয়েছেন; (মার্ক ৪:৩৮)। তিনি মানুষ হিসেবে কেঁদেছেন; (যোহন ১১:৩৫, লূক ১৯:৪১)। তিনি মানুষ হিসেবে প্রার্থনা করেছেন; (মার্ক ১:৩৫)। সুতরাং তিনি ১০০% মানুষ ছিলেন।
যীশু যে ভাববাদী/ নবী ছিলেন বাইবেলের এই বাক্যে গুলি তা প্রমাণ দেয় যথা; (মথি ২১:১১, মার্ক ৬:৪, লুক ৭:১৬, যোহন ৪:১৯)। তাছাড়া যীশু যে ভাববাদী/ নবী ছিলেন তা নানা ভাবে প্রমাণ করা যেতে পারে। যেমন ধরুন পুরাতন নিয়মে ভাববাদী/ নবীদের বাক্যে ঈশ্বরের মাধ্যমে দেওয়া হত যথা; (২ শমূয়েল ৭:১৪, ২ রাজাবলি ২০:৪, যিরমিয় ১:৪, যিহিষ্কেল ৩:১৬ ইত্যাদি) ঠিক একই ভাবে আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যখন এই জগতে এসছিলেন, তখন যখন কোন কিছু কথা বলতে বা শিক্ষা দিতেন তা ঈশ্বর বা পিতাকেই সম্বোধন করে বলতেন যে এই কথা আমার পিতার/ ঈশ্বরের যথা; (যোহন ৭:১৬, ৮:২৮, ১৭:৮)। এই সব বাক্যে বলে প্রভু যীশু স্পষ্টভাবে একজন ভাববাদীর ভূমিকা পালন করেছিলেন, কারণ তিনি ছিলেন ঈশ্বরের মুখপাত্র। এছাড়াও তিনি ভাববাদী/ নবীরা যেভাবে অলৌকিক কাজ করেছিল যেমন উদাহরণস্বরূপ বাক্যে যথা; (যাএাপুস্তক ১৪:২১-২২, ১ রাজাবলি ১৮:৩৬-৩৮, ২ রাজাবলি ৬:৬)। ঠিক একই ভাবে নূতন নিয়মে যীশু অনেক অলৌকিক কাজ করেছিলেন উদাহরণস্বরূপ কয়েকটি বাক্যে যথা; (মথি ৮:১৪-১৫, মার্ক ১:৪০-৪৫, লুক ৮:৪২-৪৮, যোহন ৬:১৬-২১)। এছাড়াও যীশু ভাববাদী/ নবী ছিলেন তার প্রমাণ স্বয়ং ঈশ্বর ভবিষ্যদ্বাণীটি ও করেছিলেন যথা এই বাক্যে বলে; (দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১৮)। যীশু ছিলেন সেই ভাববাদী/ নবী যিনি এই ভবিষ্যদ্বাণীটি পূর্ণ করেছিলেন যথা;(প্রেরিত ৩:২২, ৭:৩৭)। তাই যীশুকে ভাববাদী/ নবী বলা হয়। যীশুই চূড়ান্ত নবী ছিলেন বা ভাববাদী/ নবীর থেকেও অধিক ছিলেন।
সুতরাং সঠিক উত্তর E (A+B+C) হবে, কারণ যীশু ঈশ্বর, মানুষ ভাববাদী/ নবী উভয়েই ছিলেন।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।