বিয়ের আগে যৌনতা সম্পর্কে বাইবেল কী বলে?
প্রথম পর্ব
লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।এই বিষয়কে দুটি পর্বে আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব। আমরা জানি এই বিষয়কে নিয়ে অনেকের তিতা লাগলেও লাগতে পারে। এমনকি কিছু লোক তো বলেই ফেলবে যে, আপনারা কে অন্যের বিচার করার লোক? আমরা এই ধরনের লোককে কি বলব? যারা শিক্ষা দেওয়া আর বিচার করার মধ্যে পার্থক্য বুঝতেই পারেনা। তাদেরকে আর কি বলা যায়! হাঁ এমন লোক বলবেই তাদের কি চুপ করা যায়! নিশ্চয় না। তাদের মুখের ভাষা কিছুটা আয়তে আনা যায় তা হল সত্যের মাধ্যমে বাইবেলের বাক্যে দেখিয়ে। যদি, সেই ব্যক্তি বাইবেলের মাধ্যমে বিষয়কে বোঝানোর জন্য চেষ্টা করেন।
Image by; Karin Henseler from Pixabay |
আজকের বিষয় বস্তু সত্যি খুব গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের প্রত্যেক খ্রীষ্টীয় ভ্রাতা ও ভগিনীদের উদ্দেশ্যে। সাধারণত এই বিষয়ের বেশি প্রভাব আমাদের খ্রীষ্টীয় যুবক ও যুবতীগণদের উপরে পড়ে। বতর্মান দিনে সমাজ এই বিষয় হালকা করেই দিয়েছে যেন বিয়ে করার আগে শারীরিক সম্পর্কে কিছু মনে করা হয় না। শারীরিক সম্পর্কে পরিভাষা কি? যদি একটু সংক্ষেপে বলি তা হচ্ছে শরীরের আশা আকাঙ্ক্ষা, কিছু চাওয়া-পাওয়া মানে বিপরীত লিঙ্গের চাহিদা মেটানো কেই শারীরিক সম্পর্ক বলে। তা ভালোলাগা থেকে শুরু হয়ে ভালোবাসায় পরিণত হয় মানে হাত ধরা থেকে শুরু হয়ে কোথায় চলে যায় তা আপনারা ভালো করেই জানেন। বাক্য শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে কি বলে? তা এই বাক্যে দেখুন; (১ তীমথিয় ৪:১২ IRVBEN)।
এখানে সুস্পষ্ট ভাবে বাক্যে বলছে যে, আমাদের শরীর যেন পবিত্র হয়। এই পবিত্র শরীর বিয়ে করার আগে যেন কাউকে তুচ্ছ করতে না দেই। আমরা যেন নিজের শরীর পবিত্র রাখি। ধরুন, আপনি যদি পুরুষ হন তাহলে আপনার উচিত। যিনি ভবিষ্যতে স্ত্রী হতে চলেছেন, সেই স্ত্রীর জন্য নিজের শরীর পবিত্র রাখেন। ঠিক একইভাবে আপনি যদি নারী হন বা মহিলা হন, তাহলে আপনার উচিত যিনি ভবিষ্যতে স্বামী হতে চলেছেন, সেই স্বামীর জন্য নিজের শরীর পবিত্র রাখেন। স্বামী ও স্ত্রীর জন্য ঈশ্বরের দেওয়া শরীরকে পবিত্র করে রাখি। কোন গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড তৈরী করেও যেন ঈশ্বরের দেওয়া শরীকে তুচ্ছ না করি। এখানে আবার অনেকে বলে, আমি তাকে বিয়ে করব, তাহলে কেন তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে পারব না? আমিই তাকে বিয়ে করছি তাই না! এই সব ব্যক্তিকে আমরা কি বলব? কিছু বলার নেই যদি বুঝে ও না বুঝতে চায় নিজের বুদ্ধি দিয়ে বিচার করে আর ঈশ্বর হতে চায়। এই সব যুক্তি শয়তানের, বিশ্বাসী হয়েও তারা বুঝতে চায়ছেন না এর কারণ কি? এর কারণ হলো, সেই সব ব্যক্তি এখন ও পাপের মধ্যেই পড়ে রয়েছে। ঈশ্বর যখন তার ভাববাদী, প্রেরিত ও শিষ্যদের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করছেন, তাহলে এখানে আবার এটা কি কথা যদি আমি তাকে বিয়ে করি, তাহলে কেন আমি তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক রাখতে পারব না? এই ধরনের ব্যক্তিদের জন্য একটি সন্দুর বাক্যে যথা; (১ যোহন ২:৪ BCV)।
ঈশ্বর যখন তাঁর বাক্যেয় কিছু নিষিদ্ধ করেছেন তা পালন করাই উচিত। আমাদেরকে যেই ভাবেও ঈশ্বরের আজ্ঞাকে পালন করা উচিত আর সেটাই সত্য। নচেৎ যেই কি সেই ব্যভিচারের মধ্যেই পড়ে ঈশ্বর যৌন ক্রিয়ার বিরুদ্ধে নয়, বরং ঈশ্বর যৌন ক্রিয়া সম্পর্ক অর্থাৎ সেক্সকে আশীর্বাদ করেছেন। ঈশ্বর, চেয়েছেন যেন সবায় সেই যৌন ক্রিয়ার সম্পর্কে অর্থাৎ সেক্স আনন্দ নেয়, এবং তাঁর রাজ্যের জন্য সন্তানদের জন্ম দেয়, তাই ঈশ্বর প্রথম মানুষ আদম ও হবাকে অর্থাৎ স্বামী ও স্ত্রীকে আশীর্বাদ করেছিলেন যেমন সুস্পষ্ট ভাবে বাক্যে বলে; (আদিপুস্তক ১:২৮)। ঈশ্বর শারীরিক সম্পর্ককে একটা গণ্ডির মধ্যে রেখেছেন মানে বিয়ে মধ্যেই। বিয়ে করার আগে বা বিয়ে করার পরে কোন ভাবে শারীরিক সম্পর্ক করা উচিত নয়। তাই ঈশ্বর বিবাহকে অনেক মহত্ত্ব দিয়েছেন যেমন বাক্য বলে যথা; (ইব্রীয় ১৩:৪)।
ঈশ্বর বিয়েকে অনেক কৃতিত্ব দিয়েছেন। বিয়ে কোনো বাচ্চাদের খেলার বিষয় নয়। সেই বিয়ের মধ্যে দিয়ে দুই জন মানুষ এক হয় অর্থাৎ স্বামী ও স্ত্রী এক হয়। যার মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য একটা পরিবার গঠন হয়। যেটি ঈশ্বরের আশীর্বাদের ফল দুই জন মানুষ ধীরে ধীরে গঠন করেন। ঈশ্বর চায় সেই শয্যা মানে বিছানা যা সাধারণ ভাষায় বাসর ঘর ও বলা যায়। ঈশ্বরের বাছাই করা দুই সঙ্গী প্রথম যখন সেই বিছানায় একত্রিত হয় তা যেন নিষ্কলঙ্ক, পবিত্র, নির্মল, অকলঙ্কিত থাকে।
এখানে আবার কথা বোঝার আছে আপনারা আবার যেন সংসারের দৃষ্টি কোন দিয়ে বিচার না করেন যে, শুধু সেই বিছানাকেই বোঝান হয়েছে বলে তা কিন্তু নয়। তা উপরের লেখাতে বলা হয়েছে কি বোঝান হচ্ছে বলে! ঈশ্বরের বাছাই করা দুই সঙ্গী বোঝান হয়েছে যা মিলিত দিনের শয্যার সাথে তুলনা করা হয়েছে। জগতের চোখের মাধ্যমে দেখলে সেই শয্যা পবিত্রতই হয়। দেখুন আপনি যদি নিজের আশা আকাঙ্ক্ষাকে মানে কামুক্ত ইচ্ছা শক্তি কন্ট্রোল করতে পারছেন না, তাহলে আপনার বিয়ে করাই ভালো। তবুও যেন বিয়ে করার আগে কোন ভাবে শারীরিক সম্পর্কে জড়িত উচিত নয়। সত্যি এই কথাও পৌল তাঁর চিঠিতে খুব সুন্দর ভাবে এই বিষয়কে নিয়ে বুঝিয়ে ছিলেন যেমন এই বাক্যে বলে; (১ করিন্থীয় ৭:৯ BCV)। বিয়ে করার আগে খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাই ও বোনদের শারিরীক সম্পর্কে জড়িত হওয়া উচিত নয়। শারিরীক সম্পর্কে জড়িয়ে যেন ব্যভিচার না করেন এর জন্য পৌল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের উপদেশ দিচ্ছেন যেমন বাক্যে বলে; (১ করিন্থীয় ৭:২ BCV)।
পৌল বলছেন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা যেন ব্যভিচার না করে, তার জন্য খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের বিয়ে করা প্রয়োজন, বিয়ে মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক বা যৌন ক্রিয়াকে পবিএ বলা হয়েছে। কিন্তু বিয়ে না করে শারীরিক সম্পর্ক বা যৌন ক্রিয়া জড়িত হওয়া মানেই ব্যভিচার বা পাপ, তাই বাইবেল বারংবার এই ব্যভিচার থেকে দূরে থাকার কথা বলা হয়েছে যথা;(২ তীমথিয় ২:২২ BCV, ১ করিন্থীয় ৬:১৩ BENGALCL-BSI, ১ করিন্থীয় ৬:১৮ BENGALCL-BSI)। সুতরাং বিয়ে করা পূর্বে কোন ভাবেই যৌনতা সম্পর্কে জড়িত হওয়া উচিত নয়।
বিঃদ্রঃ- দ্বিতীয় ভাগ অবশ্যই দেখুন।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।