মহিলাদের কি চার্চে মাথা ঢেকে রাখা উচিত?
লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
বর্তমান দিনে মণ্ডলীতে/ চার্চে নারীদের/মহিলাদের মাথায় আবরণ দেওয়া নিয়ে খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসীদের মধ্যে নানা মতভেদ রয়েছে, কিছু পক্ষ বলে হাঁ মণ্ডলীতে/ চার্চে মাথা ঢাকা উচিত। আবার কিছু পক্ষ বলে এটি তখনকার দিনের কথা যখন পৌল 55 (A.D) করিন্থীয়দের চিঠি লিখেছেন। এটি তাদের পরম্পরা সংস্কৃতি সম্পর্কে লিখেছিলেন, এখন আর এই কথা প্রযোজ্য হয় না কারণ এখন যুগ বদলে গেছে। এদের মধ্যে আবার কিছু পক্ষ বলে; যদি কোন মহিলাদের লম্বা চুল রয়েছে, তাকে মাথা ঢাকা উচিত নয়। কারণ তার লম্বা চুলই ঢাকা/আবরণ মতো কাজ করে। এখন যারা নূতন বিশ্বাসী তারা হতভম্ব হয়ে যায়, এর উওর কি হতে পারে বলে।
Photo by Thirdman |
এখানে বাক্য বলেছে; ঈশ্বর আদমের জন্য তাঁর অনুরূপ একজন “সহারিণী” সৃষ্টি করতে চাইলেন। “সহারিণী” বলতে ইংরেজিতে Helper যার অর্থ সহায়ক/ সাহায্যকারী/ সহায়/ সহকারী ইত্যাদি ইত্যাদি বোঝায়। এর মানে কি হবা আদম থেকে নিকৃষ্ট বা কম হয়ে গেলেন? উওর একদম না। ঈশ্বর হবাকে আদম থেকে সৃষ্টি করে ছিলেন। সুতরাং হবাও ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তিতে সৃষ্টি হয়েছিল বাক্য বলে; (আদিপুস্তক ১:২৭)। আদম ও হবা দুইজন ঈশ্বরের চোখে সমান ছিলো। এখন আবার প্রশ্ন চলে আসে, তাহলে ঈশ্বর হবার জন্য কেন সহকারিণী ইংরেজিতে Helper যার অর্থ সহায়ক/ সাহায্যকারী/ সহায়/ সহকারী ব্যবহার করলেন? এখানে ঈশ্বর সহায় জন্য যেই হিব্রু শব্দ ব্যবহার করেছিলেন তা হল; (עֵזֶר-এজার) যেই শব্দ বাইবেলে বহুবার ব্যবহার করা হয়েছে। এই শব্দ কখনও কাউকে নিকৃষ্ট/ কম/ নূন্য/ নিম্নতর/ হীনতর করে তুলে না। বরন মানুষ একের অপরে সমতুল্য, তাি স্বামী ও স্ত্রী পরস্পর ছাড়া কখনোই নিখুঁত হয় না, বরং অসম্পূর্ণ থাকে। ঈশ্বর তাঁর রাজ্য বৃদ্ধির জন্য একটি ব্যবস্থা নির্ধারণ করেছেন, যার মাধ্যমে তিনি নারীকে পুরুষের নিকট বশীভূত করেছেন, যেমনটি বাক্য বলে; (ইফিষীয় ৫:২২)।
ঈশ্বর মানব জাতিকে বৃদ্ধি করার জন্য পুরুষ ও মহিলাদের ভিন্ন ভিন্ন পদ দিয়েছেন। পরিবারের সঞ্চালন করার জন্য ঈশ্বর আদমকে (স্বামী) পরিবারের মধ্যে প্রধান করেছিলেন (Head of the family) আর পরিবারের দেখভাল করার জন্য অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট ভাবে পরিচালিত করার জন্য হবাকে (স্ত্রী) সহকারিণী (Helper) করেছিলেন। এই ভাবে হবা আদমের অধীনে ছিলেন। কিন্তু একদিন কি হয়েছিল! যখন শয়তান হবাকে লোভ দেখিয়ে ছিলো, তখন হবা ঈশ্বরের এই অধীনতাকে অস্বীকার করেছিলো। আদমের পরামর্শ না নিয়েই হবা সেই নিষেধাজ্ঞা সদসদ্-জ্ঞানদায়ক ফল খেয়ে নেয়, আর আদমকে বাক অংশ খেতে দেয়। যদি আমরা দেখি সেই বারন করা ফল হবা আগে খেয়েছিল। এর মানে হবাকেই দোষী বলে গণ্য করা উচিত ছিল, কিন্তু বাইবেলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বর আদমকে দোষী মনে করেন (রোমীয় ৫:১২)। এখন প্রশ্ন উঠে, হবা প্রথমে ফল খেয়েছিলেন, কিন্তু দোষী আদমকে কেন করা হয়েছিল? এর কারণ হল ঈশ্বর হবাকে আদমের অধীনে রেখেছিলেন। হবা যখন আদমকে ফল খেতে দিচ্ছিল, সেই সময় আদম হবাকে বারন করতে পারত। কিন্তু আদম, জিজ্ঞাসা না করেই খেয়ে ফেলেছিলেন। এখানে আমরা পরিস্কারভাবে দেখতে পাচ্ছি, আদম তাঁর দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হননি, তাই ঈশ্বর আদমকে দোষারোপ করেছিলেন।
এই জগতে পাপের জন্য আদম দায়ী ছিলেন। যেহেতু হবা ঈশ্বরের অধীনতা অস্বীকার করে ছিলেন তাই ঈশ্বর হবাকে বলে ছিলো; “তুমি যন্ত্রাণার মধ্যে দিয়ে সন্তান প্রসব করবে, এবং স্বামী তোমার উপরে আধিপত্য করবে।” (আদিপুস্তক ৩:১৬)। এই বাক্যেয় আমরা, স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বরের অভিশাপের পর থেকে মহিলাদের কষ্ট শুরু হয়। ঈশ্বর হবাকে বলছিলেন সাধারণ ভাষায়, হবা তুমি যেমন এই ফল খেয়ে, তোমার স্বামীকে তোমার অধীন করতে চাইছিলে, তা কিন্তু যতই চেষ্টা করো,তোমার স্বামী তোমার উপরে আধিপত্য করবে। এই স্বামী ও স্ত্রী অধীনতা আদম ও হবা থেকে এসছিল।
অধীনতা ব্যবস্থা যা আজ পর্যন্ত মানব সভ্যতায় চলছে। পরিবারের প্রধান পিতা, স্ত্রী সহকর্মী এবং সন্তানরা পিতা-মাতার অধীনে রয়েছে, যারা ঈশ্বরের অধীনতা স্বীকার করে না, তারা কখনোই শান্তি দেখতে পায় না। পুরো বাইবেল অধীনতা বিষয়ে শিক্ষা দেয়। এই অধীনতা শিক্ষা ঈশ্বরের। পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে। এক ঈশ্বরের অধীনতা স্বীকার করে, আর এক অধীনতার স্বীকার করে না। যারা অধীনতা স্বীকার করে, তারা আনন্দে সহ অধীনতা স্বীকার করে যেমন ঈশ্বর তাদের উপর নির্ধারিত করেছেন; একজন স্ত্রী স্বামীর অধিন, সন্তানেরা পিতা ও মাতার অধীনে, মণ্ডলী পাষ্টারের অধীনে ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন আসুন এই আলোকে যা ঈশ্বর পবিত্র বাইবেলে পৌলের মাধ্যমে মহিলাদের মাথায় ঢাকা দেওয়ার কথা বলছেন তা বোঝার চেষ্টা করি।
একটা উদাহরণস্বরূপ; ধরুন কোন পুরুষ যদি পুলিশ বা সেনাবাহিনীতে চাকরি করে, সেই ব্যক্তি (পুরুষ) তার উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের সামনে তাকে টুপি পরে থাকতে হবে। কেন টুপি পর্বে? টুপি সেই উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের সন্মান দেওয়ার জন্য। ঠিক তদ্রুপ যখন মণ্ডলীর ব্যবস্থা মধ্যে আসে, তখন সেই পুরুষের সন্মান হিসাবে খ্রীষ্টের অধীনে হয়। তখন সেই পুরুষ কোন মানুষের অধীনে থাকে না। পুরুষটি মুক্ত কেউ তাঁর উপরে নেই। তখন খ্রীষ্ট সেই পুরুষকে অধিকার দেয়; কোন ভয়-টয় না করে, স্বাধীন হয়ে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করতে পারে। তার উপরে জাগতিক বা মানবাধিকারের কোন অধিকার নেই তাই সেই পুরুষের মাথা ঢাকা কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে তা কিন্তু নয়। বাইবেল কি বলে তা এই বাক্য দেখুন; (১ করিন্থীয় ১১:৫)।
এই বাক্যে সুস্পষ্ট ভাবে শিক্ষা দিচ্ছে; একজন খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসী স্ত্রীর মাথা ঢাকা উচিত। হয়তো এখানে অনেকে বলতে পারে, এখানে তো বিবাহিত স্ত্রীদের কথা বলা হয়েছে, থড়ি না অবিবাহিত মহিলাদের কথা বলা হয়েছে! আপনাদের জানিয়ে রাখি তা কিন্তু নয়। এখানে যেকোন নারী/মহিলা সে বিবাহিত হোক বা না হোক এই কথা উভয়েই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। এখানে যে গ্ৰীক শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে তা হল; (γυνή- gune) যেই শব্দ বিবাহিত নারী/মহিলা হোক বা নাই হোক উভয়েই ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এখানে পৌল বলছেন; যদি কোনো নারী প্রার্থনা বা প্রচার করার সময় নিজের মাথা না ঢাকা দেয়, তবে তা লজ্জার ব্যাপার (১ করিন্থীয় ১১:৬)।
এই বাক্যেয় পৌল বলছেন; যদি কোন নারী নিজের মাথায় ঢাকা না দেয়, তবে সেই নারী নিজের মাথার চুল কেটে ফেলুক। যদি সেই নারী/মহিলা মাথায় চুল কাটা লজ্জাজনক মনে হয়, তবে সেই নারী/ মহিলার মাথা ঢাকুক। এখানে পৌল যেই নারী/ মহিলা মাথা ঢাকা অস্বীকার করে, তার বিনম্রতা/ অহংকারী প্রতীক বোঝাতে চাইছেন অর্থাৎ সেই নারী/ মহিলা কোথায় যেন বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন যাকে ঈশ্বর তার উপরে নিয়োগ করেছেন। তা হয়তো সে তার পিতা, দাদা, স্বামী, মণ্ডলীর পালক যেই হতে পারে। তার অধীনতা স্বীকার করতে চাইছে না অর্থাৎ অধীনে থাকতে চাইছে না। এখানে যদি কোন মহিলা ঈশ্বরের এই অধীনতাকে প্রেমের মাধ্যমে স্বীকার করতে চায়, তাহলে তার মাথা ঢেকে রাখার কোনও আপওি থাকবে না! বাইবেল পরিস্কারভাবে মহিলাদের মাথা ঢাকার কথা বলা হয়েছে; (১ করিন্থীয় ১১:৭)।
এই বাক্যেয় পৌল বলছেন; যদি কোন নারী ঈশ্বরের ব্যবস্থায় চলতে চায় তবে সে পুরুষের গৌরব। এবং সেই নারী পুরুষের সহভাগিতা হবে ঈশ্বরের মহিমায় কারণ পুরুষ হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি ও গৌরব। তা বলে এটা নয় যে পুরুষ বড় হয়ে গেল মানে মহান হয়ে গেলো তা কিন্তু নয়। এই বাক্যের অর্থ এটাই বলছে যে ঈশ্বরের মহিমা করার জন্য আত্মিক দায়িত্ব পুরুষকে দেওয়া হয়েছে। যদি কোন নারী সেই পুরুষের সঙ্গ দেয়, সেই পুরুষ এই দায়িত্ব খুব সুন্দর ভাবে সঞ্চালন করতে পারে। তা সে স্ত্রী হোক, মা হোক বা দিদি/ বোন যেই বা হোক, সেই পুরুষের সঙ্গে সঙ্গ দিতে পারে, যাকে সেই নারীর উপরে ঈশ্বর অধীন রেখেছেন। সকল খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসী নারীদের/মহিলাদের উচিত, তারা যেন তাদের উপরে ঈশ্বর যাদের নিয়োগ করেছেন তাদের অধীনে থাকেন অর্থাৎ বশীভূত স্বীকার করুক। এটি হলো; আত্মিক অধীনতা। মণ্ডলীতে যখন কোন সভা আয়োজিত করা হয়, মানে ঈশ্বরের আরাধনা করা হয়, তখন স্বর্গদূতরা উপস্থিত থাকে। হয়তো স্বর্গদূতদের দেখতে পাওয়া যায় না, কিন্তু ঈশ্বরের দূতেরা উপস্থিত থাকে, তাই বাক্য বলছে খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসী নারীদের স্বর্গদূতদের উদ্দেশ্যে ও মাথায় আবরণ দেওয়া উচিত; (১ করিন্থীয় ১১:১০)।
এখন ধরুন, সেখানেই কোনো নারী কোমর থেকে উপরে পোশাক খুলে কাজ করছে, যেখানে পুরুষরাও কাজ করে। এখন আপনি বলুন; সেখানে কি ওই নারীর পোশাক খুলে কাজ করা সঠিক? আপনি এর উওর বলেন নিশ্চয় না। এটি একটি অপমান ও লজ্জার বিষয় হবে, সমাজ এই অবস্থায় ঐ নারীর কাজ করাকে স্বীকার করবে না। হয়তো এখন অনেক নারী রয়েছে, যারা টাকার লোভে নিজের শরীরের অঙ্গ প্রদশর্ন করে থাকে নানা মাধ্যমে, তা হয়তো চলচ্চিত্র হতে পারে বা মডেলিং জগতেও হতে পারে। এখন তো অনেক খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসী নারী বলে যে খ্রিষ্টীয় নারীদের মডেলিং করা উচিত। কিন্তু বাইবেল কখনও খ্রিষ্টীয় মডেলিং কে সমর্থন করে না। আমরা দেখলাম নারীদের পোশাক খুলে কাজ করা সম্ভব নয়। ঠিক তদ্রুপ নারীদের মণ্ডলীতে, মাথা না ঢেকে প্রার্থনা করা ভাববানী বলা শোভা দেয় না। ঈশ্বর পুরুষ ও নারীদের দুই জনকে আলাদা সৃষ্টি করেছেন। তাই বাইবেল যেই মাধ্যমে ঈশ্বরকে আরাধনা/ উপাসনা করতে বলা হয়েছে সেই মাধ্যমেই ঈশ্বরের আরাধনা/ উপাসনা করা উচিত।
উপসংহারঃ ঈশ্বর সাধু পৌল দ্বারা মন্ডলীর এক ব্যবস্থা উপস্থাপন করেছেন, যেই ব্যবস্থাতে একজন পুরুষ ও নারী ঈশ্বরকে কিভাবে আরাধনা/ উপাসনা করা উচিত তা একটি নিয়ম/ ধাপ নির্ধারণ করেছেন। যেই ব্যবস্থা পুরুষ ও নারী উভয়ই পালন করা উচিৎ। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার এটি, কিছু প্রচারক এই মন্ডলীর ব্যবস্থার শিক্ষাকে সংস্কৃতি/ ঐতিহ্য বলে শিক্ষা দেয়। ওই প্রচারকেরা এটি প্রমাণিত করতে চায় বর্তমান দিনে সাধু পৌল এই কথা নারী/ মহিলাদের উপরে প্রযোজ্য নয়। তখন অনেকে এই আধুনিক যুগে দোহাই দিয়ে থাকে, কেউ বলে আমার বাপদা অর্থাৎ পিতামহ/ মাতামহ আগেকার দিনে ধূতি/ শাড়ি পরতো। কিন্তু বর্তমানে আমরা ধূতি/ শাড়ি পরিনা। এখন যুগ বদলে গেছে অর্থাৎ দিনের পর দিন মানবসভ্যতা নূতন সংস্কৃতি (ঐতিহ্য) সংস্পর্শে আসছে। আপনাদের বলি, এই সব কথা যুক্তির বিহীন। এটি একটি বিভ্রান্তিকর শিক্ষা, যেখানে ওই ভ্রামক প্রচার এটি বলে শিক্ষা দেয়; বর্তমান দিনে সাধু পৌলের কথা নারীদের উপরে প্রযোজ্য হয় না। ওই তথাকথিত ভ্রামক প্রচারক এটি কেন ভুলে যায়! বাইবেল মাধ্যমে যুগ চলে নাকি, যুগের মাধ্যমে বাইবেল চলে! নিঃসন্দেহে বাইবেলের দ্বারাই যুগ/ সংস্কৃতি/ ঐতিহ্য যাই বলতে পারেন তা চলে। যুগ/ সংস্কৃতি/ ঐতিহ্য দ্বারা বাইবেল চলে না। বাইবেল যুগ/ সংস্কৃতি/ ঐতিহ্য কে শিক্ষা দিয়ে থাকে, কোনটি উচিৎ কোনটি উচিৎ নয় বলে! কোনটি উচিৎ কোনটি উচিৎ নয় তা বাইবেল ভিত্তিক যাচাই করা উচিত। সাধু পৌলের দ্বারা যেই কথা বাইবেল উল্লেখ করা হয়েছে, তা একটি মন্ডলীর ব্যবস্থা। মন্ডলীর ব্যবস্থাকে সংস্কৃতি/ ঐতিহ্য সাথে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। যদি মন্ডলীতে নারী/ মহিলাদের মাথায় আবরণ না দেওয়ার ছিলো, তাহলে সাধু পৌলকে সম্পূর্ণ ১১ অধ্যায় লেখার প্রয়োজন হতো না। আর নাই বা এই অধ্যায়ের কোনো মহত্ত্ব থাকতো, অর্থাৎ একজন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর এই অধ্যায় পড়ার কোনো উচিৎ নয়। সাধু পৌল এই সম্পূর্ণ ১১ অধ্যায়ে এটাই বোঝাতে চাইছেন; যদি কোনো নারী/ মহিলা নিজেকে ঈশ্বরের অধীন রয়েছে বলে স্বীকার করেন, তাহলে তাকে এটিও স্বীকার করা প্রয়োজন, সে আত্মিকভাবে কোনো একজন পুরুষের অধীনে রয়েছেন। এই অধীনতাকে প্রতিনিধিত্ব করতে তাকে মাথায় আবরণ দেওয়া উচিৎ। যেখানে চার্চের ব্যবস্থার সম্পর্কিত কথা, আপনাদের বলি বাইবেলের মূল্যবোধ (শিক্ষা) পরিবর্তিত সময় এবং পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে পরিবর্তিত হয় না। তাই সাধু পৌল মন্ডলীর ব্যবস্থার সম্পর্কে খুব সুন্দর কথা বলেছিলেন এই বাক্যেয়; (১ করিন্থীয় ১১:২ BENGALCL-BSI)
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি সাধু পৌল করিন্থীয় মন্ডলীদের মন্ডলীর ব্যবস্থা/ সংস্কার/ রীতি/ নিয়ম/ পালন করা নিয়ে উৎসাহিত করছেন প্রশংসা করে। সাধু পৌলের এই লেখা কোনো ওই সময় সংস্কৃতি/ ঐতিহ্য জন্য লিখেছেন তা কিন্তু নয়, বরং যুগ পর ধরে যখক্ষন এই পৃথিবীতে বিশ্বাসীরা থাকবে তাঁদের উদ্দেশ্য এই কথা লিখেছেন। এখানে একটি কথা আমরা সুস্পষ্ট করে দিতে চাই, নচেৎ আপনারা বিভ্রান্তিতে শিকার হতে পারেন। অবশ্যই মন্ডলীতে একজন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী নারী/ মহিলকে মাথা ঢাকা উচিৎ। কিন্তু প্রেম সহকারে। কোনো এটি নিয়ম মাএ নয়, যেখানে পাস্টোর এটা কখনো বলতে পারবে না, নারী/ মহিলাদের মন্ডলীতে মাথা ঢাকা উচিৎ, নচেৎ মন্ডলীতে আসা দরকার নেই বা একজন সাধারণ নূতন দুর্বল বিশ্বাসীকে এটা বলা উচিৎ নয়; তুমি কেন মাথায় আবরণ দাওনি। এই বাক্য আত্মিক অধীনতার বিষয়ে শিক্ষা দেয় নাকি কোনো জোরজবরদস্তি কথা বলছে! একজন পাস্টারের উচিৎ, তিনি যেন এই বিষয়ে নিয়ে প্রেম সহকারে শিক্ষা দেন, কিন্তু কারোও উপরে নিয়ম থোপে দেওয়া নয়। তিনি বোঝাতে পারেন কিন্তু কাউকে জোরজবরদস্তি করতে পারেন না। অবশ্যই সেই পাস্টোরকে প্রেম দেখানো উচিত, আর নূতন ও দুর্বল বিশ্বাসীদের বাইবেলের বিষয়ে বেড়ে উঠার সময় দেওয়া উচিত। পাস্টোরের কাজ বাইবেল বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া, কিন্তু সেই শিক্ষা গ্ৰহণ করা একজন বিশ্বাসীর কাজ।
ঈশ্বর সকলকে বোঝার মতো জ্ঞান প্রদান করুন। আমেন।।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।