যীশুর কি ভাই এবং বোন ছিল?
লেখকঃ এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
আমরা এ নিয়ে বিশ্বাসীদের মধ্যে নানা কথা বলতে শুনে থাকি, অনেকেই বলে থাকে হ্যাঁ, যীশু ভাই, বোন ছিল। আবার অনেকেই বলেন, নানা যীশুর কোনো ভাই-বোন ছিল না। এই প্রশ্নের উত্তর ক্লিয়ার করার জন্য বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস পাঠকরা এই লেখা থেকে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
Photo by Oladimeji Ajegbile |
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ধর্মতাত্ত্বিকরা যীশুর কোন ভাইবোন ছিল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক করেই যাচ্ছেন। খ্রিস্টানদের মধ্যে কিছু সম্প্রদায় বিশেষ করে রোমান ক্যাথলিক যারা নিজেকে খ্রিস্টান তো দাবি করে, কিন্তু বাইবেল হিসেবে তারা বাস্তবে খ্রিস্টান নয়। কারণ তারা বাইবেলের বিপরীত শিক্ষা দিয়ে থাকে, তারা একটু দুই পা আগে চলে। এমনিতে আমরা যখন এই বিষয় নিয়ে গুগলে সার্চ করি। সার্চ করার সময় যখন রোমান ক্যাথলিকদের ওয়েবসাইট দেখি, দেখে আমরা প্রায় অবাক হয়ে যাই। আমরা দেখলাম রোমান ক্যাথলিকদের প্রত্যেকটি ওয়েবসাই দাবি করছে, যীশুর কোনো ভাই ও বোন নেই। এগুলো তাদের ভুল শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসে, যেখানে তাঁরা দাবি করে থাকে যে, মরিয়ম চিরকুমারী ছিলেন, অর্থাৎ যীশু ছাড়া মরিয়মের আর কোন সন্তান ছিল না উদাহরণ (CCC 499, 500) তাছাড়া Ludwig Ott, (Fundamentals of Catholic Dogma, pages 203-206) দেখতে পারেন যেখানে মরিয়মকে অনেক মহিমার মণ্ডিত করা হয়েছে। তা বলে আমরা এটি বলছি না যে মরিয়ম সন্মানের যোগ্য নয় বলে! অবশ্যই মরিয়ম সন্মানের যোগ্য কারণ মরিয়ম সমগ্ৰ জগতের উদ্ধারকর্তা/ মুক্তিদাতা/ ত্রাণকর্তাকে এই পৃথিবীতে আসার জন্য স্থান দিয়ে ছিলেন। কিন্তু রোমান ক্যাথলিকরা যেমন মরিয়মকে মহিমা মন্ডল বা প্রশংসা করে, তা বাইবেলের বিপরীত শিক্ষা। প্রশ্ন দাঁড়িয়ে যায় বাইবেল অনুযায়ী যীশুর কি কোন ভাই ও বোন ছিল?
উওর হাঁ, যীশুর ভাই ও বোন ছিল। বাইবেল স্পষ্টভাবে বলে যে মরিয়ম যখন গর্ভবতী ছিলেন, তখন তিনি কুমারী ছিলেন। এবং বাইবেল একইভাবে এটি পরিষ্কার / স্পষ্টভাবে ঘোষণা করে যে যীশুর ভাই ও বোন ছিলো উদাহরণ স্বরূপ এই সব বাক্যে দেখুন; (মথি ১২:৪৬, মার্ক ৩:৩১, লূক ৮:১৯, মথি ১৩:৫৫-৫৬, মার্ক ৬:৩)। এই সব বাক্য একইভাবে প্রমাণ করে যে হে যীশুর ভাই ও বোন ছিলেন। কিন্তু বাইবেল আমাদের বলছে না যীশু কত বোন ছিল! তাদের নাম বা সংখ্যা জানানো হয়নি। কিন্তু আমরা অনুমান করতে পারি যে, যীশুর দুটি বোন ছিল, অথবা তার বেশী ছিল।
এ বিষয় নিয়ে আমাদের আগেই একটি আর্টিকেল আছে লিঙ্ক দেখুন; “যীশুর কতজন ভাই ও বোন ছিলো?” যখন ক্যাথলিকদের বাইবেলের বাক্যে গুলি দেখিয়ে দেওয়া হয়, তখন বলে নানা যীশুর কোনো আপন ভাই ও বোন ছিলো না। এরা তো তাঁর “খুড়তুত ভাই ও বোন” ছিলো। এমনিতে এই বিষয় নিয়ে ও আমরা পূর্বেই সুস্পষ্ট করেছি যে এরা কি সত্যিই যীশুর “খুড়তুত ভাই ও বোন” ছিলো কিনা! লিঙ্ক দেখুন; “মরিয়ম বাইবেলের চিরস্থায়ী কুমারীত্ব কি?”
যখন রোমান ক্যাথলিকদের এই বিষয়ে উওর দেওয়া হয় যে, এরা কোনো “খুড়তুত ভাই ও বোন” ছিল না, তখন তারা আরেকটি প্রশ্ন উঠিয়ে থাকে, রোমান ক্যাথলিকরা বলে; যদি যীশুর আপন বা সহোদর অর্থাৎ একই মা ও বাবার মিলনজাত সন্তান (ভাই ও বোন) ছিলো, তবে যীশু কেন যোহনকে বলেছিল; যোহন তুমি আমার মাকে দেখো! যেমনটি আমরা যোহন ১৯:২৬ এ দেখতে পাচ্ছি। রোমান ক্যাথলিকরা এই বাক্যে ব্যবহার করে প্রমাণ করে যে, যীশুকে কোন সহোদর ভাই বা বোন ছিল না। যীশু যদি ভাই বোন ছিল তাহলে যীশু যোহনকে এই দায়িত্ব দিতেন না! রোমান ক্যাথলিকরা যেভাবে এই বাক্যেটি ব্যাখ্যা করতে চান। তখন প্রশ্ন করলে তা বাইবেল এভাবে শিক্ষা দেয় না। ওই বাক্যের অর্থ কি তা কোনো একদিন বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে, তবে এখানে আমরা সংক্ষেপে এই বাক্যের অর্থ প্রকাশ করতে চাই। এই বাক্যে সন্তান হয়ে মায়েদের কেমন ভালোবাসতে হয় এই বিষয়টি শিক্ষা দেয় নাকি এই বাক্যে এটা বলছে; মরিয়মের যীশুকে ছাড়া আর কোনো সন্তান ছিলো না বলে! আপনারা যদি উপরের বাক্যেটি পড়েন, তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন বাক্যে কী বলছে! সুতরাং বাইবেল পড়তে হলে উপর ও নিচের বাক্যের সংঘর্ষটি দেখতে হবে।
উপসংহারঃ - বাইবেল পরিস্কারভাবে বলে যীশু মরিয়ম নামে এক কুমারী নারী থেকে জন্মগ্রহণ করেন। যোষেফ এবং মরিয়ম বিবাহিত ছিলেন, কিন্তু যীশুর জন্মের আগে তাঁদের কোন শারীরিক সম্পর্ক ছিল না। তাছাড়া, বাক্যে এটি স্পষ্ট করে যে যোষেফ এবং মরিয়ম নিজেদের সন্তান ছিল এবং তাদের নাম বাইবেলে লিপিবদ্ধ আছে। এই ভাই-বোনেরা যোষেফ এবং মরিয়মের আসল সন্তান ছাড়া অন্য কিছু বলে বিশ্বাস করার বাইবেলের আর কোনো কারণ নেই। যারা যীশুর আপন বা সহোদর ভাই এবং বোন ছিল এই ধারণার বিরোধিতা করেছিলেন তারা শাস্ত্র পাঠ করে নয়, বরং মরিয়মের চিরকালের কুমারীত্বের একটি মনগড়া পূর্বকল্পিত ধারণা।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।