Header Ads Widget

Responsive Advertisement

হ্যালোইন এর উৎপত্তি কি?| What are the origins of Halloween?

হ্যালোইন: হ্যালোইন অর্থ, উৎপত্তি, হ্যালোইন  চার্চে  সংযুক্ত

✍️ এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।

ইদানীং আমরা দেখেছি ফেসবুকে রং চং মেখে ভূত সেজে অনেক বন্ধু-বান্ধব ছবি শেয়ার করেই চলেছেন। হ্যালোইন শব্দটি শুনলেই অদ্ভুত সব পোশাক, বিশাল সব মিষ্টি কুমড়া, ট্রিক অর ট্রিট ইত্যাদির কথা যেন মাথায় ঘোরাঘুরি করে থাকে। পশ্চিমা সংস্কৃতির অংশ হলেও, ইদানিংকালে আমাদের ভারতবর্ষের ও আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশেও, খুবই এই হ্যালোইন উৎসব দিনের পর দিন জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে, বেড়েই চলেছে। আজকে আমার এই লেখার সাহায্য এই হ্যালোইন এর উৎপত্তি কি তা সংক্ষেপে জানতে চেষ্টা করব। 

হ্যালোইন এর উৎপত্তি কি

হ্যালোইন কথার অর্থ কি - Halloween meaning in Bengali


হ্যালোইন শব্দটি ‘হ্যালোজ ইভেনিং’ এর অর্থ; ‘পবিত্র রাত বা পবিত্র সন্ধ্যা’ শব্দের উৎপত্তি হচ্ছে স্কটল্যান্ডের ‘অল হ্যালোস ইভে’ (All Hallows’ Eve)। স্কটিশ ভাষায় ‘ইভ’ মানে ‘even’ একে বলার সময় “een” সময়ের সাথে সাথে এক সময়ের All-hallows’ eve টা হয়ে গেল (All) Hallow(s) e(v)en অর্থাৎ Halloween. 

হ্যালোইন উৎপত্তি - The origin of Halloween in Bengali 


এই “হ্যালোইন” উৎসবটি (কেল্টিক অথবা সেল্টিক) জাতির ঐতিহাসিক বা প্যাগানীয় উৎসব “সাউইন” (স্যামহেইন) থেকে নেওয়া হয়। প্রাচীন আইরিশ ভাষায় ‘সাউইন’ নামে এই উৎসবটি পালন করা হয়, যার অর্থ ‘স্রীষ্মের শেষ’। কেল্টিক ভাষার একটি শাখা হলো গেলিক। গেলিক ভাষা- স্কটিশ, ম্যানক্স ও আইরিশদের ভাষার একটি সংযুক্ত রূপ। কেল্টিকদের নতুন দিন সূর্যাস্ত পরে শুরু হয়। সাউইন তাদের তখন শুরু হয় যখন ৩১ অক্টোবর সূর্য ডুবে গেলে। আর একইসাথে শীতের সূচনা হয়। এই দিনটি প্রাচীনকাল থেকেই কেল্টিক বা গেলিক প্যাগানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দিন তারা আগুন জ্বালাতো সেল্টিক দেবতাদের কাছে, সেই বছরের ফসলের জন্য কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এবং নতুন আসন্ন বছরে অনুগ্রহের আবেদন হিসাবে সেল্টিক দেবতাদের উদ্দেশে ফসল ও পশু বলিদান করত। কেল্টিক জাতির ধারণা ছিলো অক্টোবরের শেষ দিনের রাত সবচেয়ে খারাপ। তারা বিশ্বাস করত যে, হ্যালোউইনের প্রাক্কালে, জীবিত এবং মৃতের মধ্যে কোনও সীমানা থাকে না এবং আত্মারা অবাধে সব জায়গায় চলাচল করতে পারে। অর্থাত্‍ জীবিতের সঙ্গে মিলিত হয় মৃতেরা, জাগতিক সব কিছুর সঙ্গে ভৌতিক সব কিছু মিলে যায়‌।

হ্যালোইন রোমান ক্যাথলিক দ্বারা চার্চ উত্থাপন

এই উৎসবের উৎপত্তিস্থল স্বয়ং “রোমান ক্যাথলিকদের” মাধ্যমে। যারা নিজেকে খ্রিস্টান তো দাবি করে কিন্তু বাস্তবে তারা খ্রিস্টান নয় কারণ বাইবেলের অধিকাংশ বাক্যকে তীরস্কার করে থাকে। রোমান ক্যাথলিকদের পোপ চতুর্থ বনিফেইস ৬০৯ খ্রিস্টাব্দে “ফেরলিয়া” (Feralia) থেকে পরিবর্তন করে “অল সেন্টস ডে” তে স্থানান্তরিত করে। রোমের প্যাগান “প্যান্থিয়নকে” ধন্য মরিয়ম (Saint Mary) ও অন্যান্য সাধুদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন, সেটি ছিল মে মাসের ১৩ তারিখ। ১৩ মে একই সাথে ছিল রোমানদের মৃতদের উৎসব “লেমুরিয়ার” তারিখ, এ দিন রোমানরা বিগত সাধুদের স্মরণ করতো। প্রাথমিকভাবে, রোমান ক্যাথলিকদের পোপ চতুর্থ বনিফেইস গ্রীষ্মের আগে উদযাপন করার জন্য অল সেন্টস ডে বা “অল-হ্যালোজ ডে” সূচনা করেছিলেন। পরে পোপ গ্রেগরি তৃতীয় (৭৩১-৭৪১ খ্রিস্টাব্দে) “অল সেইন্টস ডে” এর তারিখ মে মাস থেকে সরিয়ে ১ নভেম্বরে নিয়ে আসে। পরে নবম শতকে পোপ চতুর্থ গ্রেগোরির (৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে) পালনের নির্দেশে দেন। এইভাবে প্রাচীন কেল্টদের পালিত “সাহ উইন” উৎসব থেকেই মূলত হ্যালোইনের সূত্রপাত। 

মৃতদের উদযাপন তিন দিনের ব্যাপার ছিল যার মধ্যে “অল হ্যালোজ ইভ” (৩১ অক্টোবর), “অল সেন্টস ডে” (নভেম্বর ১), এবং “অল সোলস ডে” (২ নভেম্বর)। প্রতি বছরই ৩১ অক্টোবর হ্যালোউইন উদযাপিত হয়। গ্রীষ্ম এবং শীত, জীবিত এবং মৃতের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করার জন্য হ্যালোইন উদযাপন করা হয়। তাই কেল্টিক জাতির সদস্যরা এই রাতে বিভিন্ন ধরনের ভূতের মুখোশ ও কাপড় পরতো। তারা নির্ঘুম রাত কাটাতে আগুন জ্বালিয়ে মুখোশ পরে বৃত্তাকারে একসঙ্গে ঘুরতেন ও মন্ত্র-টন্ত্র যপ করতেন।

তথ্যসূত্র
  1.  “Halloween| Definitio, Origin, History, & Facts” Encyclopædia Britannica. (ইংরেজি ভাষায়)
  2. BBC - Religions - Christianity: All Hallows'Eve” bbc.co.uk. (ইংরেজি ভাষায়)
  3. How the Early Catholic Church Christianized Halloween” history.com (ইংরেজি ভাষায়)
  4. Halloween|Etymology of the name Halloween” etymonlone.com (ইংরেজি ভাষায়)
  5. Halloween Story” digilander.libero.it (ইংরেজি ভাষায়)
  6. Origins of Halloween and the Day of the Dead” edsitement.net.gov (ইংরেজি ভাষায়)



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ