যীশু কারদের জন্য মারা গেছিলেন?
লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
আজকের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই সবাইকে অনুরোধ দয়া করে পুরো লেখাটি পড়ার চেষ্টা করুন।
Photo by Alexandra Fuller on Unsplash |
এই বিষয় বস্তুটি এমন একটি বিষয় বস্তু যা নিয়ে খ্রিষ্টানদের মধ্যে নানা মতবাদ রয়েছে। খ্রিষ্টানদের থেকে আর এক পা আগে চলে মুসলিম ভাই ও বোনেরা। তারা বলে যীশু ক্রুশেই মারা যায়নি, আপনারা কার কথা বলছেন? মুসলিমদের দাবি হিসেবে তারা বলে; যীশু ক্রুশে মারা যায়নি বরং তাঁর বদলে অন্য কেউ মারা গেছে। জাগগে বিধর্মী লোকেরাকে কি বলে তা আমাদের মুল আলোচনায় বিষয় নয়। আমরা আমাদের আলোচনা বিষয়টি-ই আলোচনা করি।
আমরা এ ব্যাপারে এমিলার্ডিজম, ক্যালভিনিজম ও আর্মেনিয়ামের বিভিন্ন ধারণা দেখেছি। ক্যালভিনিজম হিসাবে তাদের দাবি, যীশু শুধুমাত্র নির্বাচিতদের জন্য এসেছিলেন তাই নির্বাচনকারীদের জন্য উদ্ধার বাস্তবতা দেয়। আর আর্মিনিয়ানিজমের দাবি বা শিক্ষা দেয়, যীশু সকলের জন্য এসেছেন তাই প্রায়শ্চিত্ত সীমাহীন। এবং সকলের জন্য উপলব্ধ পরিত্রাণ সম্ভব করে। এদের দাবি হিসেবে বাইবেল হিসেবে দেখলে কিছুটা ঠিকই মনে হয়, কিন্তু এরা ও যেই কি সেই পরিত্রাণ ক্ষেএে একটু বিভ্রান্তি ধারণা রয়েছে। তাছাড়া এমিলার্ডিজম শিক্ষা দেয়, খ্রীষ্ট সমস্ত মানুষের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর কেবল তাদের-ই পরিত্রাণ প্রয়োগ করেন যাদের তিনি বেছে নিয়েছেন। এটি অসীম/সীমাবদ্ধ প্রায়শ্চিত্ত নামক কিছু ক্যালভিনিস্টিক চেনাশোনাতে, একটি দৃশ্যের সাথে সম্পর্কিত হয়ে যায়। এদের দাবি হিসেবে ও দেখলে কিছুটা ঠিকই মনে হবে, কিন্তু যখন পরিএাণের কথা চলে আসে তখন বিভ্রান্তি শিক্ষা দেয়। এখন প্রশ্ন এসে যায়, তাহলে যীশু কারদের জন্য মরলেন? এই ব্যাপারে বিস্তারিত বাইবেল ভিত্তিক আলোচনা করার আগে, যীশু কেন ক্রুশে মারা যাবেন তা সংক্ষেপে বর্ণনা করা যাক, তাহলে আমরা স্পষ্টভাবে উওরের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।
বাইবেল বলে; এই সুন্দর পৃথিবীতে প্রথম আদম ও হবা নামক দুই জন মানুষকে সৃষ্টি করা হয়। সৃষ্টি করার পর ঈশ্বর তাঁদের বিয়েও দিয়ে দিলেন। তারা স্বামী ও স্ত্রী হয়ে এই সুন্দর পৃথিবীতে জীবন অতিবাহিত করছিলো। ঈশ্বর, যখন এই পৃথিবীতে তাদের সৃষ্টি করে ছিলেন, তখন ঈশ্বর জানতে চাইলো, যাকে আমি সৃষ্টি করেছি সেই অতি উওম মানুষ তারা কি আমায় অন্তর থেকে ভালোবাসে কিনা! মানে ঈশ্বর মানুষকে Free will দিলো যার কথার অর্থ হচ্ছে; স্বয়ং থেকে বেছে নেওয়া অধিকার। তাঁরা পবিত্র ছিলো, কিন্তু পবিত্রতার পরিক্ষা হয়নি। ঈশ্বর তাঁদের এদ্যন নামক বাগানে রেখে ছিলেন। বাগানে একটি সুন্দর ফল গাছ ছিল। ঈশ্বর আদম ও হবাকে এই ফল খাওয়ানোর নিষেদ্ধ দিয়েছিলেন। ওরা যদি ফল খায় তাহলে সঙ্গে-সঙ্গ মারা যাবে। কিন্তু কি হলো একদিন শয়তান, যে পূর্বে স্বর্গদূত ছিলো। সে যেখানে ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টি যাদেরকে নিজের মতো করে সৃষ্টি করেছিলো, সেই আদম ও হবাকে একটা এদ্যন নামক বাগানে রেখে ছিলেন।
সেখানে শয়তান চলে আসে, আর দুইজনকে উৎকাতে থাকে। অবশেষে একদিন আদমের স্ত্রীর হবা, শয়তানের জালে ফেঁসে যায়। আর ঈশ্বরের আজ্ঞাকে উলঙ্ঘন করে বসে, হবা সেই ফল খেয়ে ফেলে, সাথে স্বামীকেও দিয়ে দেয়। যখন-ই তারা ফল খায়, তখন তাদের পবিএতার অদৃশ্য বস্ত্র খুলে যায়, আর তাঁরা বুঝতে পারে যে আমরা উলঙ্গ রয়েছি। তখন তারা নিজেদের লুকাতে থাকলো। আর লতা-পাতা দিয়ে নিজের পাপ বা শরীর ঢাঁকতে শুরু করে দেয়। যতক্ষন তাঁরা সেই ফল খাইনি, ততক্ষন তারা উলঙ্গ থাকার সত্ত্বেও লজ্জাবোধ কোনো কিছুই ছিলো না, কারণ বিশ্বাসরূপি অদৃশ্য বস্ত্র পরে ছিলো। যেমনি ঈশ্বরের আজ্ঞা তাঁরা উলঙ্ঘন করেছে, তেমনি তাদের বিশ্বাসরূপি অদৃশ্য বস্ত্র তাঁদের শরীরে থেকে খুলে পড়ে যায়। পরে ঈশ্বর, এসে তাদেরকে ডাকতে থাকলেন, তারা কোথায় আছে বলে! ঈশ্বর জানেন, তারা ফল খেয়ে লুকিয়ে আছে বলে! ঈশ্বর, তাঁদেরকে ডাকলো এবং তাঁরা সাডা দিলো। পাপ করার ফলে তারা বুঝতে পারল, তারা উলঙ্গ। তখন তারা গাছের লতাপাতা দিয়ে নিজের শরীর ঢাকতে লাগল। তখন ঈশ্বর কি করলেন! এক চামড়ার পোশাক দিলেন। তারা যেন তাদের শরীর ঢাঁকে বলে যেমন এই বাক্যে বলে; (আদিপুস্তক ৩:২১ BCV)।
এই বাক্যেটি ভালভাবে দেখুন, এখানে ঈশ্বর আদম ও হবাকে চামড়া পোশাক পরিয়েছেন। ঈশ্বর এই পোশাক কোথায় পেয়েছেন? নিশ্চয় কোনো না কোনো প্রাণীকে হত্যা করছেন! বাইবেল এটা বলে না যে ঈশ্বর কোন প্রাণীকে হত্যা করেছেন কিন্তু আমরা ইঙ্গিত তো পাই, যে ঈশ্বর চামড়া ব্যবহার করেছেন তা একটি প্রাণীরই হবে। ঈশ্বর ঐ চামড়া পোশাক দিয়ে আদম ও হবাকে তাদের পাপ সম্পর্কে অনুভব করতে চাইছিলেন। ঈশ্বর তাঁদের বলছিলো; দেখো তোমরা পাপ করলে আর আমাকে নির্দোষ প্রানীকে বলিদান করতে হচ্ছে। তখন থেকে পাপের বলিদান শুরু হয়ে যায়। ঈশ্বর বললেন ঠিক আছে; তোমরা পাপ করছে তার জন্য আমাকেই কিছু করতে হবে। তখন ঈশ্বর সৃষ্টির প্রথম মানুষ আমাদের আদি পিতা ও মাতা অর্থাৎ আদম ও হবাকে, আশার আলোর সুসমাচার শুনানো হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল; ঈশ্বর তাঁর একমাত্র পুএকে এই পৃথিবীতে পাঠাবেন, যিনি শয়তানকে ধবংস করবেন যেমন এই বাক্য বলে; (আদিপুস্তক ৩:১৫)।
আদম ও হবার পাপের ফলে বংশপরম্পরায় সকল মানুষের কাছে পাপ চলে আসে। আর সকলেই পাপী হয়ে যায়। পাপ করার ফলেই মানুষ ঈশ্বর কাছ থেকে দূর হয়ে যায়। দিনের পর দিন মানুষ পাপ করতে থাকে, তখন ঈশ্বর এক ব্যক্তিকে মনোনীত করেন যার নাম; অব্রাহাম। তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন অব্রাহামের বংশধর মাধ্যমে ঈশ্বর পুনরায় মানুষকে পাপ থেকে মুক্ত করে, ঈশ্বরের সান্নিধ্যেয় আনবেন। পরিস্কারভাবে বলা যায় যে, যীশুকে সকল মানুষের পাপের জন্য ক্রুশে মারা যেতে হয়েছিল। এখন বাইবেল হিসেবে জানা যাক যীশু কাদের জন্য মৃত্যুবরণ করে ছিলো। আগেই বিষয়টি বোঝানো হয়েছে যে, যীশু কাদের জন্য মারা গেছেন বিষয়টি ভালো করে বোঝার জন্য এই বাক্য দেখুন; (মথি ২০:২৮, মার্ক ১০:৪৫)।
এখানে বাক্য দেখুন, বাক্য কি বলছে বলে! বাক্য সুস্পষ্ট ভাবে বলেছে; “অনেক লোকের জন্য নিজের প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে এসেছেন”।এখানে কোনো স্পেশাল লোকদের জন্য নিজের প্রাণ দিতে আসেননি। ঠিক তদ্রুপ আরও কিছু বাক্য আছে, যেই বাক্যের সাহায্য এটাই পরিস্কার হয়ে উঠে যে, যীশু সকল মানুষের জন্য নিজের জীবন দিতে এস ছিলেন উদাহরণস্বরূপ এই বাক্যেগুলি দেখুন; (যোহন ১১:৫২, রোমীয় ৩:২৫, ২ পিতর ৩:৯, ১ যোহন ২:২, প্রকাশিত বাক্য ৫:৯)।আমরা এতোগুলো বাক্যের সাহায্য সুস্পষ্ট হলাম, যীশু সকল মানুষের জন্য এই জগতে এসছিলেন। কোনো বিশেষ জাতি, গোষ্ঠী ও ধর্ম্মাবলম্বীদের জন্য আসেননি।
ঈশ্বর সকলকে বুঝার মতো জ্ঞাণ প্রদান করূন।
আমেন।।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।