ভারতে কখন-কিভাবে খ্রিস্টান ধর্ম আসে? এবং ভারতের খ্রিষ্ঠান ধর্ম্মের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?
লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
আপনি হয়তো শুনেছেন, লোকেরা বলে যে ইংরেজরা (ব্রিটিশরা) ভারতে খ্রিস্টান ধর্ম নিয়ে আসছে। এই ইংরেজরা ভারতে সাধারণ মানুষের উপর অত্যন্ত কঠোরভাবে নির্যাতন করেছে। ইংরেজরা ভারতবর্ষের মানুষের ধর্ম বদলানোর চেষ্টা করছে। ভারতের জনগণ এখনও বিভ্রান্তিতে রয়েছে। এই বিষয়ে জানার জন্য বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে এই বিষয়ে খুব সুন্দর নিবন্ধ লেখা হয়েছে। মানুষ তদন্ত করে না, এটাই বলা যায়। আজ আমরা এই বিষয়ে সংক্ষিপ্তভাবে জানার চেষ্টা করব, বিশেষ করে ইংরেজরা কি (ব্রিটিশরা) খ্রিস্টান ধর্ম ভারতে নিয়ে এসেছে কিনা!
Photo by Jacob Bentzinger on Unsplash |
ঐতিহাসিক হিসাবে, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মৃত্যুর পরে যিরুশালেম থেকে এসেছিলেন, একজন ব্যক্তি যার নাম তোমার, যাঁকে বাইবেলের ভাষায় দিদুমঃ বলা হয়, দিদুমঃ শব্দের অর্থ হল [যমজ] যেমন বাক্য বলে; (যোহন ১১:১৬)। এই থোমা যিনি প্রভু যীশু খ্রীষ্টের শিষ্য ছিলেন (মথি ১০:৩, মার্ক ৩:১৮, লুক ৬:১৪)। খ্রিস্টান ধর্ম ৫২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে কেরালা কোডুঙ্গালুর (Kodungallur) নামক জায়গায় প্রভু যীশু খ্রীষ্টের শিষ্য থোমা দ্বারা সূএপাত হয়।
সেখানে তিনি প্রথম বারের মতো পা রাখলেন। এবং সেখানে তিনি প্রথম বারের মত প্রভু যীশু শুভ সন্দেহ দিতে শুরু করেন, যেটিকে বাইবেলের পরিভাষায় সুসমাচার বলা হয়। যেই সুসমাচার ছিলো; মানুষের পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার আশার আলো। তিনি জীবনের আশার আলোর সুসমাচার বিস্তর লোকদের শুনাতে থাকেন। এবং পরম করুণাময় ঈশ্বর স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পবিত্র আত্মায় সহায়তা বিস্তর অলৌকিক কাজ করছিলেন। মানুষ জীবন আশা আলো সুসমাচার শুনে, কেন যীশু এই পৃথিবীতে এসেছিলেন? কেন যীশু একজন পাপী মানুষকে পাপের জন্য নিরপরাধ হওয়া সত্ত্বেও জীবন দান করেন? এবং মৃত্যু পর কেন-ই জীবিত হয়ে উঠেন? তখন লোকেরা নিজের পাপ বুঝতে পেরে, বিশ্বাস করে প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে গ্রহণ করতে শুরু করে। এবং বিশ্বাস সহকারে বাপ্তিস্ম নেয়। সেখানে তিনি অর্থাৎ থোমা তখন মণ্ডলী স্থাপিত করেন। তিনি সর্বপ্রথম ভারতে কিছু মণ্ডলীর স্থাপিত করেন।
থোমা দ্বারা স্থাপিত সাত মণ্ডলীর নামঃ
(১) কোডুঙ্গালুর [Kodungallur]
(২) পলয়ূর [Palayoor]
(৩) পর্বুর [Paravur]
(৪) কোক্কামঙ্গলম [Kokkamangalam]
(৫) নীরনাম [Niranam]
(৬) নীলাকাল [Nilackal]
(৭) কুইলন মন্ডলী [Quilon]
YouTube Channel:👉Glory Apologetics
শিষ্যরা যীশুকে স্বচোখে দেখে, দেখার পর থোমাকে জানায় যে আমরা যীশুকে দেখেছি। থোমা শিষ্যদের এই কথা বিশ্বাস করেননি। থোমা অবিশ্বাস করলেন, কারণ এই রকম ঘটনা তখন পর্যন্ত কখনও হয়নি, কেউ মারা যাওয়ার পর পুনরায় জীবিত হয়ে উঠে বলে! তখন থোমা বললেন; “আমি যতক্ষণ না তাঁর হাতে পেরেকের চিহ্ন দেখি এবং পেরাকের চিরস্থায়ী জায়গায় আঙুল রাখি এবং আমার হাত তাঁর বুকের পাশে রাখি, আমি বিশ্বাস করব না” যীশু পুনরুত্থিত হয়েছেন বলে! একদিন সেই সময় এসেই গেলো। একদিন একটা ঘরে সকল শিষ্য উপস্থিত ছিলো, সেই দিন থোমা ও উপস্থিত ছিলো। বদ্ধ ঘরে হঠাৎ যীশু, অলৌকিকভাবে মাঝখানে উপস্থিত হোন। তখন যীশু থোমাকে কি বলেছিলেন এই বাক্য দেখুন; (যোহন ২০:২৭ SBCL)।
থোমা স্ব-চোখে প্রভু যীশুকে দেখার পর বিশ্বাস করে ছিলো। প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে স্পর্শ করে তিনি বিশ্বাসের একটি সুন্দর স্বীকারোক্তি করেছিলেন। থোমা কি বলেছিলেন তা জানার জন্য এই বাক্য দেখুন; (যোহন ২০:২৮ SBCL)। থোমা প্রায় দশ বছর ওইখানে থেকে সেবা করেছিলেন, এবং লোকেদের যীশু খ্রীষ্টকে স্বীকার করতে সাহায্য করেছিলেন। তারপরে তিনি বর্তমান চেন্নাইয়ের মাইলাপুরে পাড়ি দিয়েছিলেন। সেখানেও তিনি তাই করলেন, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কথা লোকদের কাছে প্রচার করেছিলেন তাতে অনেকেই প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছে আকৃষ্ট হয়েছিলেন, অর্থাৎ, মানুষ প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস এনেছিল। ঈমান বা বিশ্বাস এনে, সকলে খ্রীষ্টকে গ্ৰহণ করতে শুরু করে।
আপনারা জানলেন যে, খ্রিস্টান ধর্ম কোন ইংরেজ (ব্রিটিশরা) নিয়ে আসেননি। ইংরেজ (ব্রিটিশরা) শাসন করার বহু বছর পূর্বে ভারতে খ্রিস্টানের উৎপত্তি হয়ে ছিলো। এটি ভারতবাসীরদের দুর্ভাগ্য, যে ইতিহাসের পাতায় খ্রিষ্টানদের সম্পর্কে উল্লেখ নেই। বরং উল্টো, খ্রিস্টানের অন্য ভাবে দেখানো হয়েছে। ইংরেজ (ব্রিটিশরা) বাস্তবে কোনো খ্রিস্টানে ছিলো না। তারা খ্রীষ্টিয়ানের এক কলঙ্ক ছিলো। তারা শুধু এই মহান দেশ ভারতকে লুট করার জন্যই প্রচেষ্টা চালিয়ে ছিলো। তাদের শাসন কালে খ্রিষ্টানদের নানা সমস্যার মুখে সম্মুখীন হতে ও হয়েছিল। খ্রিষ্টানরা কখনও লোভ দেখিয়ে কারোর ধর্ম পরিবর্তন করে না। খ্রিস্টানদের সৌন্দর্য এই যে, তারা খুশিভাবে অন্যদের সাথে জীবন ভাগ করতে চায়, তাই তারা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের এই সুসমারটি অন্যদেরকে শুনাতে চেষ্টা করে, যেন অন্যরা সেই সুসমারটি শুনে বিশ্বাস করে উদ্ধার পায়। কিন্তু নরকের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে স্বর্গে প্রবেশ করে। খ্রিষ্টানরা ধর্ম পরিবর্তন করে এই মানষিকতা থেকে বের হয়ে আসুন। খ্রিস্টান কাউকে জর-জবরদস্তি করে ধর্ম পরিবর্তন করায় না।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।