“ঈশ্বর প্রেম” এই কথার অর্থ কি? (১ যোহন ৪:৮)
লেখকঃ এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।
আমরা দেখেছি, এই বিষয় নিয়ে খ্রীষ্ট বিশ্বাসরা কিছু না কিছু প্রশ্ন করেই থাকে। আর বলে এই বিষয় নিয়ে বাইবেল ভিওিক বিস্তারিত ভাবে বোঝান, যে এই কথার অর্থ কি বলে! চলুন আজকের শিরোনাম সরাসরি আলোচনা করা যাক। আলোচনা করার আগে আসুন বাইবেলে প্রেমকে কীভাবে বর্ণনা করা হয়েছে তা একবার দেখে নেওয়া যাক। বাইবেল পরিস্কার করে বলে; প্রেম সবসময় ধৈর্যশীল, দয়ালু, হিংসা করে না, গর্ব বা অহংকার করে না, গালি দেয় না, নিজের সুবিধা খোঁজে না, রাগ করে না, কারও মন্দ মনে রাখে না, এবং মন্দে আনন্দ করে না। বরং যা সত্য তাতেই আনন্দ করে। প্রেম সব কিছু বহন করে, সব কিছু বিশ্বাস করতে ইচ্ছুক, সব কিছু আশা করে এবং সব কিছু সহ্য করে। উদাহরণস্বরূপ পবিত্র বাইবেলের এই বাক্যে দেখুন যথা; (১ করিন্থীয় ১৩:৪-৭)।
Image by Freepik |
ঈশ্বর কখনো কাউকে ভালোবাসতে বাধ্য করেন না। যারা এই প্রেমে আসে, তারা নিজেরাই তাঁর (ঈশ্বরের) ভালবাসায় আহ্বানের উত্তর দেয়। ঈশ্বর প্রেমের জন্য সকলের প্রতি করুণাময়। প্রেম পক্ষপাত ছাড়াই সকলের মঙ্গল করেন। প্রেম কিছুই লোভ করে না। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করে। প্রেম তার শারীরিক রূপান্তর নিয়ে গর্বিত নন, যদিও তার শক্তি দ্বারা তিনি তার কাছে আসা সকলের উপর শাসন করতে পারেন। প্রেম (ঈশ্বর) আনুগত্য দাবি করে না। ঈশ্বর তাঁর পুত্রের আনুগত্য দাবি করেননি, কিন্তু যীশু স্বেচ্ছায় তাঁর স্বর্গীয় পিতার আনুগত্য করেছিলেন। ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ ভালবাসা তাঁর পুত্র প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় যেমন এই সব বাক্য বলে যথা; (যোহন ৩:১৬, রোমীয় ৪:২৫, ইফিষীয় ২:৪-৫, রোমীয় ৫:৮, ১ থিষলনীকীয় ৩:১১-১৩, রোমীয় ৮:৩২, ২ থিষলনীকীয় ২:১৬, ১ যোহন ৪:৯)।
এই পদগুলোতে আমরা দেখতে পাই যে, ঈশ্বরের মহত্ত্বর আকাঙ্ক্ষা, যেন আমরা তাঁর অনন্তকালীন বাসস্থান স্বর্গে তাঁর সাথে থাকি। আমাদের পাপের জন্য বেতন তিঁনি তাঁর পুএ যীশুর মাধ্যমে সম্ভব করেছেন। তিঁনি আমাদের ভালবাসেন, কারণ তিঁনি তাঁর ইচ্ছামত কাজ করতে চান, যদি আমরা নিজের পাপ স্বীকার করি তো তিঁনি বিশ্বস্ত। তিঁনি আমাদের পাপ সকল ক্ষমা করতে চান যেমন বাক্য ও বলে; (১ যোহন ১:৯-১০)। ঈশ্বরকে প্রেম/ ভালবাসার মূল বলা হয়েছে কেন তা এই বাক্যেয় উত্তর সুস্পষ্ট হয়ে যায় যেমন বাক্য বলে; (১ করিন্থীয় ১৩:৪-৭)। ঈশ্বর যখন এই জগতে এসছিলেন অর্থাৎ নিজেকে যখন পুএ যীশুর মাধ্যমে জগতে প্রকট মানে প্রকাশ করে ছিলেন, তখন তিঁনি বিশ্বাসীদের এক নূতন আজ্ঞা দিয়ে ছিলেন। কি সেই আজ্ঞা দিয়ে ছিলেন তা এই বাক্যেয় বলা হয়েছে যথা ; (যোহন ১৩:৩৪-৩৫)।
ঈশ্বর/ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট আমাদের একের অপরকে প্রেম বা ভালোবাসাতে শিখিয়েছেন। মনে রাখবেন জাগতিক প্রেম/ ভালোবাসা কিন্তু নয়। যেই প্রেমে আমাদের যুবক ও যুবতীদের মাধ্যমে দেখতে পাওয়া যায় তা কিন্তু নয়। যেই প্রেমে শুধু মাত্র শারীরিক আশা-আকাঙ্ক্ষা মানে স্বার্থ-ই থাকে সেই প্রেম কিন্তু নয়। এটি ঈশ্বরের প্রেমের বর্ণনা এবং যেহেতু ঈশ্বর প্রেম; (১ যোহন ১:৮)। তাহলে, ঈশ্বর প্রেম, এর মানে কি? এর মানে হলো; ঈশ্বরের প্রতি প্রেম মানে ঈশ্বরের গুণাবলীর একটি। ঈশ্বরের চরিত্র ও ব্যক্তিত্বের মূলে রয়েছেই প্রেম। তাই ঈশ্বরের প্রেম কোনভাবেই তাঁর পবিত্রতা, তাঁর ন্যায়পরায়ণতা, তাঁর ন্যায়বিচার, এমনকি তাঁর ক্রোধের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে না। ঈশ্বরের সমস্ত গুণাবলী নিখুঁত একতায় রয়েছে। ঈশ্বর প্রেমের মনোভাব সব কিছু করেন। একইভাবে তিনি সবকিছু সঠিকভাবে এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে করেন। ঈশ্বর সত্যিকারের প্রেমের প্রতীক। ঈশ্বর আশ্চর্যজনকভাবে তাদের ভালবাসা দেন, যারা তাঁর পুত্র যীশুকে তাদের ব্যক্তিগত পরিত্রাতা/ মুক্তিদাতা বা উদ্ধারকর্তা/ এাণকর্তা হিসাবে গ্রহণ করেন যেমন এই বাক্যে সুস্পষ্ট ভাবে বলে যথা; (যোহন ১:১২, রোমীয় ৮:১৪-১৭, গালাতীয় ৩:২৬, ইফিষীয় ১:৫, ১ যোহন ৩:১, গালাতীয় ৪:৫, ১ যোহন ৩:২৩)। এটি আত্মিক প্রেমে। তাই বাক্য বলেছে যে ঈশ্বর প্রেম যথা; (১ যোহন ৪:৮, ১ যোহন ৪:১৬)।
ঈশ্বর সকলকে বোঝার মতো জ্ঞান প্রদান করুন।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।