খ্রিস্টানদের কি খ্রিস্টমাস ট্রি ব্যবহার করা উচিত?
লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/শিখুন।
বর্তমান সময়ে যেমন সান্তাক্লজ, ক্রিসমাস ট্রি ছাড়া বড়দিনটি অসম্পূর্ণ বলে মনে হয়, আজকে আমরা এই ক্রিসমাস ট্রি সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করব, সবাই পুরো লেখা পড়ুন।
Image by Ирина Безмен from Pixabay |
এই খ্রিষ্টমাস ট্রি পরম্পরা সংস্কৃতি Christianity শুরু করা বহু বছর আগে থেকেই পালিত হয়ে আসছিল। প্রাচীন কালে মানুষেরা পাইন বা দেবদারু গাছকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে চিহ্নিত করতো। পশ্চিম দেশে অন্য ধর্মের লোকদের যখন তাদের উৎসব পালিত হত। তখন তারা চিরসবুজ গাছ ব্যবহার করে ঘর-বাড়ি সাজাতো। এবং কিছু দেশে তো অন্ধ বিশ্বাসের ফলেও ঘর-বাড়ি সাজানো হতো। তারা মনে করতেন যে এই চিরসবুজ গাছ বাড়ির দরজার সামনে বা জানালায় রাখলে ভূত, প্রেত, মন্দ, আত্মা, অশুভ ছায়া দূর হয়ে যায়।
প্রাচীন রোমান নিবাসী লোকদের কৃষি দেবতার উদ্দেশ্যে একটি উৎসব পালিত হত যা Saturnalia নামে পরিচিত। সেই দিন রোমান নিবাসীরা চিরসবুজ গাছপালার শাখাগুলির মাধ্যমে ঘর-বাড়ি সাজাতেন। পরে যখন রোমান ক্যাথলিক প্রধান পোপ জুলিয়াস প্রথম সূর্য দেবতার জন্মদিনকে বদলে প্রভু যীশুর জন্মদিন বলে ঘোষণা করেন। মানে Christmas বলে ঘোষণা করে দেন। তখন ও লোকেরা চিরসবুজ গাছ ও শাখাগুলির মাধ্যমে ঘর-বাড়ি সাজাতে থাকেন। তখন এই প্রভাব তাঁদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। অনেকের মতে এটি তাঁদের প্রতীক হয়ে গেছিলো। জগত তো জানে না রোমান ক্যাথলিকরা আদৌও সঠিক অর্থে বিশ্বাসী নয়। রোমান ক্যাথলিকদের মতে, এই চিরসবুজ গাছটি খ্রিস্টান প্রতীক খ্রিস্টমাস ট্রি পরিণত।
বর্তমানে যেই কৃত্রিম খ্রিষ্টমাস ট্রি দেখতে পাই তা এই পরম্পরা সংস্কৃতিকে ষোড়শ শতাব্দীতে প্রথম বার জার্মানির খ্রিষ্টানরা বড়দিনের সময় এই চিরসবুজ গাছকে ঘরে এনে নতূন এক রুপ দিয়ে দেয়। বিশ শতাব্দীতে এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এই ভাবে সমগ্ৰ দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠে তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মের সংস্কারক Martin Luther খ্রিষ্টমাস ট্রি সঙ্গে মোমবাতি প্রচলন করেন। বর্তমান জগত খ্রিষ্টমাসকে/বড়দিনকে কেক খাওয়া, মজ-মস্তি, সান্তা ক্লজ, খ্রিষ্টমাস ট্রি বলে জানে কিন্তু প্রভু যীশুর জন্মের সম্বন্ধে এতো কিছু জানেন না। কারণ এই সব চিহ্ন বড়দিনের মূখ্য ভূমিকায় প্রতীক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বাইবেল কোথাও লেখা নেই যে, খ্রিষ্টমাস ট্রি লাগিয়ে বড়দিন উৎসব পালন করি বলে! খ্রিষ্টমাস ট্রি তো দূরের কথা বড়দিন পালন করা উচিত কিনা তা নিয়েই কিছু লিখা নেই।
বরং এই বাক্যে (ইফিষীয় ৪:১৭) পরজাতীয় লোকদের মতো আমাদের চলতে বারন করেছে। একটা কথা জানাই তা বলে এটাও বোঝানো হচ্ছে না যে, আপনি খ্রিষ্টমাস ট্রি লাগিয়ে পাপ করছেন তা কিন্তু নয়, বা বড়দিন পালন করা উচিত নয় বলে! তাও কিন্তু নয়। অবশ্যই আপনি রোমীয় ১৪:৫-৬ পদ হিসেবে স্বতন্ত্র রয়েছেন। অবশ্যই আপনি এই বাক্যের অনুরূপ স্বতন্ত্র রয়েছেন ব্যবহার করুন বা না করুন তা আপনার সিদ্ধান্ত। বাইবেলে এমন কিছু নেই যা ক্রিসমাস ট্রিকে আদেশ বা নিষেধ করে। ক্রিসমাস ট্রি থাকা বা না থাকার কোন আধ্যাত্মিক তাৎপর্য নেই। তাছাড়া অবশ্যই বড়দিন ও পালন করতে পারেন কিন্তু সঠিক অর্থে পালন করা উচিত।
বড়দিন পালন করা উচিত কিনা এই বিষয় নিয়ে বাইবেল ভিত্তিক বিস্তারিত ভাবে উওর জানতে এখানে ক্লিক করুন খ্রিস্টানদের কি বড়দিন পালন করা উচিত কি? দেখুন খ্রিস্টমাস ট্রি লাগিয়ে আপনি পাপ তো করছেন না কিন্তু খানিকটা মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে বলে মনে হয়। এমনিতে জগতের লোক প্রভু যীশু সম্বন্ধে পূর্বে থেকেই ভূল ধারনায় ডুবে রয়েছে। মুক্তিদাতার জন্মের সম্বন্ধে জানে না তো এই সব প্রতীক ব্যবহার করে লোকেরা বিভ্রান্তি হতে পারে, তাই সবচেয়ে ভালো হয় এই সব প্রতীক ব্যবহার না করাই। আমাদের লক্ষ্য সেই মুক্তি দাতার শুভ সংবাদ অপরের কাছে পৌঁছে দেওয়া। অপর ব্যক্তি সেই মুক্তিদাতার শুভ সংবাদ শুনান। অপর ব্যক্তি যেন সুসমাচার শুনে উদ্ধার পায়। জানি এখন খ্রিস্টমাস ট্রি বর্জন করা সম্ভব নয়। আমরা যা পছন্দই করি না কেন, এই বিষয়ে বিবেকের পরিস্কার রাখতে হবে। যদি ক্রিসমাস ট্রি অন্য কিছু মনে করেন তবে নিশ্চিত এটি পাপ বা মূর্তি পূজা বোঝাবে।
ঈশ্বর সকলকে বোঝার মত জ্ঞান প্রদান করুন।আমেন।।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।