যীশু খ্রীষ্ট কে ছিলেন?
লেখকঃ- এসো বাইবেল শিখি/শিখুন।
আজকের এই প্রশ্ন সত্যি নিজে থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ। হয়তো এই প্রশ্নের উওর আপনি জানেন যে যীশু কে ছিলেন বলে! তবুও অধিকাংশ লোক আছে যারা এই উওরের সম্পর্কে সম্বন্ধে অজানা। তাদের উদ্দেশ্য এই লেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকল পাঠকেরা দয়া করে পুরো লেখা পড়বেন।
যীশু কে ছিলেন? - Who is Jesus in Bengali
যীশু কে ছিলেন এই নিয়ে বহু ধর্মে নানা মতোভেদ রয়েছে, কেউ বলে যীশু একজন নবী ছিলেন, কেউ বলে যীশু একজন ভালো গুরু ছিলেন, কেউ বলে যীশু একজন জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন, কেউ বলে যীশু একজন মধ্যস্তত ছিলেন, কেউ বলে যীশু একজন কাল্পনিক ব্যক্তি ছিলেন, বতর্মান আমাদের দেশের গলিগলির লোক জানে যীশু ইংরেজদের ভগবান (ঈশ্বর) অর্থাৎ খ্রীষ্টীয়ানদের ভগবান (ঈশ্বর)। মানব ইতিহাসে সব চেয়ে অধিক প্রশ্ন করার মধ্যে একটি, এবং বর্তমান নেট দূনিয়ার অধিক রিসার্চ মধ্যেও একটি যে যীশু খ্রীষ্ট কে ছিলেন? যীশু কে ছিলেন? এই বিষয়ে খ্রিস্টান এবং অ-খ্রিস্টান লেখকদের দ্বারা অনেক বই (পুস্তক) লেখা হয়েছে। প্রায় 2000 হাজার বছর আগে এই একই প্রশ্ন অনেকের দ্বারা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, যীশু কে ছিলেন? এটা নিয়ে একদিন প্রভু যীশু নিজে তাঁর শিষ্যদের ও জিজ্ঞাসাবাদ করনে এই বাক্যটি বলে; (মথি ১৬:১৫)।
বাইবেল যীশুর সম্পর্কে কি বলে?
এই প্রশ্নটি নতুন প্রশ্ন নয়। তাহলে, যীশু কি বলে দাবি করেন? যীশু কে ছিলেন এই নিয়ে অনেক পয়েন্ট দেওয়া যায়। কিন্তু এখানে সংক্ষেপে কিছু পয়েন্ট উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে যেমন ধরুন;
- যীশু নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে সম্বোধন
- যিহুদিদের সাথে যীশুর বচসা
- অদ্ভুত রীতি অনুযায়ী বন্ধ ঘরে যীশুর দর্শন
যীশু নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে সম্বোধন
পাঠকেরা আসুন যীশু নিজের সম্পর্কে কি বলে বাক্য দেখে নেওয়া যাক; (যোহন 10:30)। এই পদে যীশু স্পষ্টভাবে ঈশ্বর বলে দাবি করেছেন। কিন্তু ঈসা'র এই দাবীর ফলে ইহুদীরা যীশুকে হত্যা করার জন্য পাথর তুলে নেয়। পাথর তুলে নেওয়ার ফলে যীশু/ ঈসা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে ছিল কেন পাথর মারতে চাইছে বলে? (যোহন ১০:৩২)। বচন দেখুন উওরে ইহুদীরা কি বলছে; (যোহন 10:33)। এই বিবৃতিটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে ইহুদিরা যীশুকে ঈশ্বর বলে দাবি করতে বুঝতে পেরেছিল। বরং এখনে যীশু, যিহূদীদের সংশোধন করে দেননি যে, নানা আমি এটি কখন বললাম যে, আমি ঈশ্বর বলে! অর্থাৎ আমি আর আমার পিতা এক বলে! আপনাদের শুনা ভুল হয়েছে। এখানে যীশু এইভাবে কোন কিছুই বলেনি অর্থাৎ যার মানে যীশু/ ঈসা ঈশ্বর ছিলেন। যীশু যেটি দাবি করেন, সুতরাং যীশুই ঈশ্বর ছিলেন।
যিহুদি (ইহুদীদের) সাথে যীশু বচসা
আমরা যোহন ৬; ৭; ৮ অধ্যায়ে দেখতে পাই যীশু যখন পৃথিবীতে ছিলেন, তখন ইহুদী ফরীশী বা প্রধান যাজকেরা যীশু/ ঈসার সাথে খুব তর্কবিতর্ক করছিল, কারণ ওই ভণ্ড ইহুদীদের যীশুর কথায় কানে এমন জ্বালা লাগত যেটি বলাও সম্ভব নয়। যেমন ধরো, বর্তমান দিনে পাপা ভক্তদের, পাপা ভক্তদের পাপা যখন ভুল কিছু করে, তখন ওই পাপাকে খণ্ডন করলে পাপা ভক্তদের খুব জ্বালা লাগে, ঠিক সেই রকম যীশুর সময়ে থাকা ভণ্ড যিহুদের জ্বালা লাগত। আমরা ৮:৫১ পদে দেখতে পাই যীশু বলছিলেন; “যদি কেউ তাঁর বাক্য/আদেশ/শিক্ষা হিসাবে চলে, তাহলে তার কখনও মৃত্যু হবে না।” যীশুর এই কথা শুনে ইহুদীরা বিরক্তিকর হয়ে উঠে। কারণ তারা যীশুর কথা সহ্য করতে পারত না। তখন এই কথা শুনে যীশুকে বলতে শুরু করে দেয় - তোমাকে ভুতে ধরছে, কারণ আমাদের পিতা অব্রাহাম এবং নবীরা তো মারা গেছেন। কিন্তু তুমি বলছ নাকি যে, আমার বাক্যের হিসাবে চলে, তার কখনও মৃত্যু হবে না। তাহলে কি তুমি আমাদের পিতা অব্রাহাম থেকে মহান নাকি!
তুমি তোমার বিষয়ে কি বলো! তখন যীশু এই নিয়ে বোঝান। বোঝাতে গিয়ে, যীশু এক “ঈশ্বরীয়” কথা বলেন, যীশু কি কথা বলেন তা জানতে এই বচন দেখুন; (যোহন 8:58)। যীশু এখানে ইহুদীদের বলছিলেন যে ইব্রাহিমের জন্মের আগে আমিই ছিলাম। এখানে যীশু যে নাম দিয়ে নিজেকে সম্বোধন করেছে যে, “আমি আছি” এই উক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ছিলো। এই উক্তি ঈশ্বরত্ত্বের সম্পর্কে নিয়ে বাইবেল নিদের্শ করে। এই উক্তি আমরা পুরাতন নিয়মে দেখতে পাই, যা থেকে আমরা সুস্পষ্ট হয়ে যাই যীশুই ঈশ্বর ছিলেন। পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর মোশিকে এই নাম দিয়েই পরিচয় দিয়ে ছিলেন, যেমন এই বাক্য বলে যথা; (যাত্রাপুস্তক ৩:১৪)।
অদ্ভুত রীতি অনুযায়ী বন্ধ ঘরে যীশুর দর্শন
একদিন যখন যীশু মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে শিষ্যদের দেখা দেন, তখন শিষ্যদের মধ্যে একজন যার নাম থোমা যাকে দিদুমঃ বলা হয়। শিষ্যরা এসে থোমাকে বলল আমরা না যীশুকে দেখেছি তিনি জীবিত আছেন। শিষ্যদের এই কথা শুনে থোমার বিশ্বাস হল না। থোমা বলল যতক্ষণ না আমি তাঁর দুই হাতে পেরেকের চিহ্ন না দেখি, সেই চিহ্নের মধ্যে আংগুল না দিই এবং তাঁর পাঁজরে হাত না দিই, ততক্ষণ আমি কোনমতেই আমি বিশ্বাস করব না। থোমা নিজের জেদে অটল ছিলেন। তিনি যতক্ষণ যীশুকে স্বচক্ষে না দেখেন ততক্ষণ কোন মতে বিশ্বাস করতে নারাজ। আট দিন পরে শিষ্যরা যখন একটি ঘরে ছিলেন, তখন তাঁদের সঙ্গে শিষ্য থোমাও ছিলেন। তখন যীশু হঠাৎ দ্বার বদ্ধ ঘরের মধ্যে আসলেন যেমন এই বাক্য বলে;(যোহন ২০:২৬)। এখানেও প্রমাণ রয়েছে যে যীশু ঈশ্বর ছিলেন। যীশু অলৌকিকভাবে তালাবদ্ধ ঘরে প্রবেশ করলেন। তিঁনি যদি ঈশ্বর না হন তাহলে ওই বদ্ধ ঘরে প্রবেশ করলেন কীভাবে? এখান থেকেও প্রমাণ পাওয়া যায় যে তিনি নিজেই ঈশ্বর ছিলেন।
ঈশ্বরের ক্ষমতা আছে সকলের কাছে একই সময়ে উপস্থিত হওয়ার। তাই যীশু বললেন; “যেখানে দুই বা তিনজন আমার নামে একত্রিত হয়, সেখানে আমি তাদের মধ্যে আছি” (মথি ১৮:২০)। অর্থাৎ যীশু সেই সামর্থ্য আছে ধরুন আমি বাংলাদেশ থেকে যীশুকে ডাকছি, কেউ ভারত থেকে, কেউ আমেরিকার থেকে, কেউ ইস্রায়েল থেকে যীশু একই সময়ে সবার কাছে বিদ্যমান হতে পারেন। তার প্রমাণ ও যীশু সেই বন্ধ ঘরে প্রবেশ করে দেখান। যীশু এসে থোমাকে বললেন; “তোমার আংগুল এখানে দিয়ে আমার হাত দুটি দেখ এবং তোমার হাত বাড়িয়ে আমার পাঁজরে হাত দাও। অবিশ্বাস করো না বরং বিশ্বাস কর।” থোমা যীশুকে দেখার পর বিশ্বাস করেছিলেন;(যোহন ২০:২৮)। এখানে থোমা যীশুকে ঈশ্বর বলে সম্বোধন করেছিলেন। যীশু থোমাকে এখানে সংশোধন করেননি, যীশু বলেননি থোমা এ কি করছো? আমি ঈশ্বর নই, তুমি আমাকে ঈশ্বর বল কেন? তুমি কি জানো না যে ঈশ্বর একজন, যেমন এই সব বাক্যে লেখা আছে; (দ্বিতীয় বিবরণ 4:35,4:39,যিশাইয় 45:5)। এই সমস্ত বাক্যে দেখিয়ে যীশু থোমাকে কিছু কী বলেন!
যীশু থোমাকে সংশোধন করেছিলেন কি? যীশু জবাবে সেরকম কিছু বলেননি, কিন্তু যীশু থোমার সম্বোধন গ্রহণ করেছিলেন, কারণ তিঁনিই ছিলেন ঈশ্বর। এবং পিতা ঈশ্বর যীশুর পূর্ণতা ঘোষণা করেন যেমন এই বাক্যে বলা হয়েছে; (ইব্রীয় ১:৮)। অর্থাৎ যীশু ঈশ্বর ছিলেন। এই বাক্যেয় পিতা পুএকে ঈশ্বর বলে সম্বোধন করছেন। পুরাতন নিয়মে ভবিষ্যৎবানীতে যীশুকে ঈশ্বর হওয়ার দাবীও করে যেমন এই বাক্যে বলে; (যিশাইয় ৯:৬)। যীশুই যে, ঈশ্বর ছিলেন তা বহু বাক্যের সাহায্যে প্রমাণ করা যায়। তাছাড়া যীশু যে ঈশ্বর ছিলেন তা সর্বোচ্চ পরিপক্ক প্রমাণ হলো এই বাক্য যথা; (যোহন ১:১)। যদি এই বাক্যকে সাধারণত ভাষায় প্রয়োগ করি তো এই ভাবে হয়, আদিতে যীশু ছিলেন, এবং যীশু ঈশ্বরের কাছে ছিলেন, এবং যীশু ঈশ্বর ছিলেন। এই বাক্যের আবার পরিপক্ক প্রমাণ হলো এটি যথা; (যোহন ১:১৪)। এই বাক্যের সাহায্য যীশুই যে ঈশ্বর ছিলেন তা প্রমাণিত হয়।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই
আমাদের জানান।
ধন্যবাদ ।