Header Ads Widget

Responsive Advertisement

খ্রিস্টানদের কি জামাইষষ্ঠী পালন করা উচিত?| Christian should be celebrate Jamai Sashthi?

খ্রিস্টানদের কি জামাই ষষ্ঠী পালন করা উচিৎ?

লেখকঃ এসো বাইবেল শিখি/ শিখুন।

এই উওরটি হাঁ কি না তা আপনাদের উপরে লাগু (প্রযোজ্য) হ‍য়। আমরা আপনাদেরকে এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ভাবে বোঝানোর চেষ্ঠা করছি কিন্তু নির্ণয় স্বয়ং আপনাদের নিতে হবে তো চলুন কথা না বাড়িয়ে আলোচনার দিকে অগ্ৰসর হই যে খ্রিস্টানদের কি জামাইষষ্ঠী পালন করা উচিত।

খ্রিস্টানদের কি জামাইষষ্ঠী পালন করা উচিত
Photo by Alexandra Fuller on Unsplash 

জামাই ষষ্ঠী কি?

জামাই ষষ্ঠী হল বাঙ্গালীদের একটি উৎসব, যা সাধারণত জামাইদের জন‍্য জৈষ্ঠ্য মাসের দিকে এই উৎসব পালন করা হয়। উৎসব বলতে আমরা সেই ধরনের উৎসবের কথা বলছি না যা পাবলিক প্লেস (জায়গায়) হয় যেখানে অনেক লোক সমাগম হয় সেই উৎসবকে উপভোগ করার জন‍্য যেমন; দুর্গাপূজা, কালীপূজা, গনেশ পূজা, মকর সংক্রান্তি ও ইত‍্যাদি। জামাই ষষ্ঠী উৎসব বলতে এটি সাধারণত পারিবারিক উৎসব বোঝায়। এই শুভ দিন তাদের পরিবারের জামায়ে জন‍্য একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়ে থাকে, পরম্পরা সংস্কৃত আছে যা জামাইদের একটি বিশেষ দিন আদ‍র খাতির করা হয়ে থাকে‌। এবং এই উত্সবটি যেমন দেখায়, এই উত্সবটির সংস্কৃত উত্সের স্থায়ী বাঙালি ঐতিহ্যের একটি কারণ রয়েছে।

মা ষষ্ঠী সম্পর্কিত লোক কাহিনী

কথিক আছে একজন পেটুক গৃহবধূ ছিলেন। সে স্বামীর বাড়ির মাছ বা অন্যান্য ভাল খাবার রান্না হলেই, লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নিত আর শাশুড়ির কাছে অভিযোগ করত সব বেড়ালে খেয়ে নিয়েছে অর্থাৎ খেয়ে বিড়ালের উপরে দোষ দিয়ে দিতো। বেড়াল মা ষষ্ঠীর বাহন ছিলো। মনের দুঃখে কাঁদতে কাঁদতে বেড়ালটা বনে গিয়ে মা ষষ্ঠীর কাছে সব কথা জানিয়ে দেয়। জানিয়ে দেওয়ার পর তখন মা ষষ্ঠীদেবী খুব রেগে গেলেন। সেই পেটুক গৃহবধূকে শিক্ষা দেওয়ার জন‍্য ঠিক করলেন। কয়েকমাস পর সেই গৃহবধূর সন্তান হলো। তখন মা ষষ্ঠীদেবী সেই গৃহবধূর সন্তান কেড়ে নেয়, এইভাবে সেই গৃহবধূর সাত সাতটি সন্তানের জন্ম দিলেন। কিন্তু একইভাবে সকলেই যেন কোথায় নিখোঁজ হয়ে গেল। ফলে স্বামী, শাশুড়ি পাড়া-পড়শি লোকেরা সকলে বলা চালু করল, “এ নিশ্চয়ই রাক্ষসীনিজের ছেলেমেয়ে খেয়ে ফেলে। ‘অলক্ষণা’ বলে গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। গৃহবধূ মনের দুঃখে বনে চলে যায় ও একাকী কাঁদতে থাকেন। বনে এসে মা ষষ্ঠীর নাম করে কাঁদতে থাকলেন তার কান্না শুনে মা ষষ্ঠীর দয়া হল। 

তিনি একজন বুড়ির ছদ্মবেশে এসে গৃহবধূরটিকে জিজ্ঞেস করলেন, “কি হয়েছে? কাঁদছিস কেন?” তখন গৃহবধূ তার সব দুঃখের কথা জানান। তখন বুড়ি বললো; তোর দুঃখের কথা বললি, কিন্তু তোর সন্তান হওয়ার আগে, খাবার চুরি করে এবং নিজেদের বিড়ালের উপর দোষ দিতে তা তো বললে না! ভুল বোঝাবুঝির পর তিনি দেবীর আরাধনা করেন। দেবী খুশি হয়ে তাঁর বাচ্চাগুলোকে ফিরিয়ে দেন। এই অনুপ্রেরণা থেকেই এই উৎসব পালন করা। এটাই জামাইষষ্ঠী বা অরণ্যষষ্ঠী ব্রতকথার মূল গল্প। 

এখানে দেখা গেলো একটি দেবীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যাকে বাইবেল বলে মূর্তিপূজা। আগে ছিল প্রতিমা পূজা, এখন উৎসব জামাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জামাই ষষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। জামাই ষষ্ঠীর মূল উদ্দেশ্য হল মাতৃত্ব (গর্ভধারণ) এবং বংশবৃদ্ধি এবং কন্যার সুখী বিবাহিত জীবন লাভের জন্য মঙ্গল।

জামাই ষষ্ঠীতে বেলে পাতা হাতে বাঁধানো, পাখা দিয়ে হাওয়া করার, দূর্বা ঘাস ও তিন বার ষাট, ষাট বলা ও প্রভৃতি এই গুলোর কিছু প্রতীক আছে মানে অর্থ আছে।

  • বেলে পাতাঃ বেলে পাতার প্রতীক হল, জামাইয়ের সঙ্গে মেয়ের বন্ধন, সম্পর্ক অটুট থাকুক ও জামাইয়ে পরিবারের সঙ্গে মেয়ের পরিবার সম্পর্ক চিরতরে অটুট থাকাকে বোঝায়। 
  • পাখা দিয়ে হাওয়াঃ করার অর্থ, সমস্ত আপদ-বিপদ দূরে যাক, শান্ত থাকুক পরিবেশ। 
  • দূর্বা ঘাসঃ চির সবুজ ও চির সতেজের প্রতীক।
  • তিন বার ষাট ষাটঃ দীর্ঘায়ু কামনা করা।
আপনারা দেখলেন এটি  মূর্তিপূজা থেকে গৃহীত এবং এটিতে অন্ধ বিশ্বাস ও জড়িত রয়েছে। এখন আমরা বাইবেলে দেখব বাইবেলে এই বিষয় নিয়ে কি বলে! 

জামাই ষষ্ঠী সম্পর্কে বাইবেল কি বলে?

বাইবেল বারংবার বিশ্বাসীদেরকে অন‍্য জাতিদের পরমপরা সংস্কৃত পালন করতে না বলে, যেন পরজাতি লোকদের মতো না চলি; (ইফিষীয় ৪:১৭)। এই কথা আমরা পুরাতন নিয়মেও দেখতে পাই ঈশ্বর ইস্রায়েলদেরকে বলছিলেন; (যিরমিয় ১০:২)। বাইবেল বলে যখন আমরা অবিশ্বাসী ছিলাম তখন আমরা অবিশ্বাসির ন‍্যায় চলতাম, কিন্তু এখন যখন আমরা প্রভুতে এসছি। বিশ্বাস সহকারে ঈশ্বরকে গ্ৰহণ করেছি তখন আগের মতো কোন পরমপরা সংস্কৃত বা কোন কিছু করতে পারি না। কারণ এখন আমরা নতূন সৃষ্টি হয়েছি এই বাক্যের অনুরূপ যথা; (২ করিন্থীয় ৫:১৭)। এখানে বিশ্বাসীদের কথা বলা হচ্ছে, যারা বিশ্বাস করে ঈশ্বরকে গ্ৰহণ করেছেন। আমরা ঈশ্বরকে পরিধান করেছি, পুরাতন বিষয়কে ত‍্যাগ করে নূতন ভাবে সৃষ্টী হলাম। সেই অর্থে অন‍্য জাতিদের মত কিছু করতে পারিনা। ঈশ্বরের বাক‍্য মত আমাদেরকে পবিএ হওয়া দরকার যথা; (লেবীয় পুস্তক ১১:৪৪ইফিষীয় ৫:৮)। আমরা এখন প্রত‍্যেকে বিশ্বাসী প্রভু যীশুর প্রতিনিধি (Representative) করি। আর আমরাই যদি ভূল পথে চলি তবে যে নূতন বিশ্বাসী মানে সদ‍্য যে যীশুকে গ্ৰহণ করেছে সে কি করে 

যীশুর উপরে বিশ্বাস ধরে রাখতে পারবে! দুর্বল বিশ্বাসী আপনাকে দেখে ভুল পথে চলে যেতে পারে, সেই দুর্বল বিশ্বাসের কাছে খ্রিস্টান ধর্ম ও অন্য ধর্ম দুটোই সমান মনে হবে অর্থাৎ বিশ্বাস আর অবিশ্বাস এর মধ্যে পার্থক্য থাকল কোথায়! তার মানে উওর কি দাঁড়াল বিশ্বাসী হয়েও অন‍্য ধর্ম্মের সব কিছু করা যায় যেটা বাইবেল হিসাবে পাপ বোঝায়। বাইবেল প্রত‍্যেক বিশ্বাসীকে কি বলে এই বাক্য দেখুন; (২ করিন্থীয় ১৩:৫)। অনেক লোক বলে আমি ঈশ্বরকে জানি গ্ৰহণ করেছি, কিন্ত তাদের জীবন দেখলে যেই কি সেই সাংসারিক জীবনে ভোগ-বিলাশে ব‍্যস্ত, সাংসারিক রিতীরিবাজ ঢুবে রয়েছে। বিশ্বাসী হয়ে কাউকে প্রেম, দৃঢ়তা সহকারে বারন করতেই পারে না যে আমি এখন বিশ্বাসী, বিশ্বাসী হয়ে আমার বিশ্বাস তা করতে স্বীকৃত দেয়না। তাদের উদ্দেশ্য বাক‍্য; (১ যোহন ২:৪)।আবার অনেক লোক বলে আমি  খ্রীষ্টিয়কে গ্ৰহণ করেছি। কিন্ত আমার পরিবার তো নয়। আমি শুধু তাদেরকে নিয়ম মাএ ডেকেছি আনন্দ উপভোগ করার জন‍্য আমি কোন রিতীরিবাজ করিনা। আমি আমার পরিবারকে কতো ভালোবাসী তা বোঝানোর 

জন‍্য এই সব করেছি। হাঁ আপনি আপনার পরিবারকে কতো ভালোবাসেন তার জন‍্য কিছু করতে তো পারেন যেমন বাক্যে ও বলে যথা; (১ তীমথিয় ৫:৮)। কিন্তু আমরা আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনি যদি আপনার পরিবারকে ভালোবাসার জন‍্য করেন তাহলে এই দিনই কেন? বছরে অনেক মাস ও দিন থাকে, ওই দিন তাহলে কেন হয় না? নাকি এখন ঈশ্বরের কাছে এসে অন্য ধর্মের রীতিনীতিতে বিশ্বাসী! অথবা এটা করছেন কারণ আপনার সম্পর্ক চিরতরে ভেঙে যাবে। 

উপসংহার

খ্রীষ্টের প্রিয়ো ভাইবোনেরা আমরা জানলাম Christiander Ki Jamaishashthi Palan Kara Uchit এটি সাধারণত অবিশ্বাসীদের উৎসব যা বাইবেল বিশ্বাসীদের পালন করা সঠিক নয়। বিশ্বাসীদের জানা প্রয়োজন যে কোন উৎসবকে পালন করার মানে হচ্ছে যে, ওই উৎসবে জুড়ে থাকা পরম্পরা সংস্কৃত রিতীরিবাজকে পালন করে ওই উৎসবকে স্বীকৃতি দেওয়া বোঝায়। আর একসঙ্গে অন্যের সাথে উৎসবে আনন্দ করা বোঝায়।

সূত্র ওয়েবসাইটঃ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ